চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার জলদী রেঞ্জের পাইরাং বিটের মনুমার ঝিরি এলাকায় একটি পুরুষ হাতি নৃশংসভাবে হ’ত্যার শিকার হয়েছে। হত্যার পর দুর্বৃত্তরা হাতিটির দাঁত ও নখ কেটে নিয়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটে গতকাল, তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে এটি আজ পর্যন্ত আড়াল রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক আবেগঘন পোস্টে সাংবাদিক ও গবেষক (ITEK) হোসাইন সোহেল লিখেছেন, “আমার কোন ভাষা নেই!” তিনি জানান, “সারাদেশে গত ২৮ দিনে ৬টি হাতি হ’ত্যার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া, গত ছয় মাসে আরও ডজনখানেক হাতি হ’ত্যা হয়েছে। বনবিভাগের কোন জবাবদিহিতা নেই! এবং হাতি সংরক্ষণে ব্যর্থতার লজ্জাও নেই!”
পরিবেশ ও প্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনও বনবিভাগের এহেন নীরবতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, এভাবে একের পর এক হাতি হ’ত্যা চলতে থাকলে বিলুপ্তপ্রায় এই প্রাণীকে বাঁচিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এলাকাটিতে দীর্ঘদিন ধরেই বন্য প্রাণী পাচার ও শিকারের মতো অপরাধ ঘটে চলেছে, অথচ প্রশাসনের তেমন কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই।
পরিবেশবিদদের মতে, হাতি শুধু একটি প্রাণী নয়, এটি একটি পরিবেশগত ভারসাম্যের প্রতীক। এর মৃত্যু মানে শুধুই একটি প্রাণীর মৃত্যু নয়, বরং একেকটি প্রাণ হারানো মানে প্রকৃতির উপর আরেকটি গভীর ক্ষত।
এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা বা তদন্তের খবর পাওয়া যায়নি। বনবিভাগের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ২০০-২৫০ এর মতো বন্য হাতি অবশিষ্ট রয়েছে, যা প্রতিনিয়তই কমে যাচ্ছে। সুরক্ষা, সচেতনতা ও আইনি ব্যবস্থার জোরালো প্রয়োগ ছাড়া এই মহাবিপন্ন প্রাণীগুলোর টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে।
সামাজিক মাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সংশ্লিষ্টদের কাছে জবাবদিহিতা ও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে পরিবেশবাদীরা।