বিধ্বস্ত গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধের এক ভয়াবহ ও নতুন মাত্রা সামনে এসেছে। একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে, গাজার ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে বিতরণ করা গমের ময়দা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিপজ্জনক মাদক Oxycodone। এটি শুধু একটি ব্যথানাশক নয়, বরং একটি মারাত্মক opioid, যার অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার একজন মানুষকে চরম মাদকাসক্তে পরিণত করতে পারে।
গাজার পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে মানুষ কেবল একমুঠো ময়দার জন্য ৩০ কিলোমিটার হেঁটে যায়, তারপর কাঁধে করে বহন করে ফিরে আসে সেই দুর্বিষহ পথ দিয়ে। এই ময়দায় যদি Oxycodone মেশানো থাকে, তবে তা কেবল একজন মানুষকে শারীরিকভাবে নয়, মানসিক ও নৈতিকভাবে ধ্বংস করে দেওয়ার মতোই ভয়ঙ্কর।
বিশ্বজুড়ে চিকিৎসকদের কাছে Oxycodone পরিচিত একটি সর্বশেষ বিকল্পব্যথানাশক ওষুধ হিসেবে। এটি সাধারণত যুদ্ধক্ষেত্রের মারাত্মক আঘাত, যেমন ফ্র্যাকচার, অঙ্গ বিচ্ছেদ ইত্যাদির জন্য ব্যবহার করা হয়। এমনকি অপারেশন-পরবর্তী ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এটি সীমিত সময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। কিন্তু নিয়মিত ব্যবহার এটি মাদকাসক্তিতে রূপ নিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল ফোর্সেস সহ বহু সামরিক বাহিনীর সদস্য এই ওষুধের ভয়ঙ্কর আসক্তির শিকার হয়েছেন। এর সর্বোচ্চ ঝুঁকি হলো—নিয়মিত সেবনে Tolerance তৈরি হয়ে যায় এবং ডোজ না বাড়ালে প্রভাব আসে না। অতঃপর নেশার তাড়নায় কেউ কেউ Overdose করে মৃত্যুবরণ করে। আর সেই ভয়াবহ মাদক আজ গাজার নিরীহ শিশু, নারী ও পুরুষদের জন্য সরবরাহকৃত ময়দার মধ্যেই মিলছে!
বিশ্লেষক ও মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, Israel Defense Forces এবং সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যদি মানবিক ত্রাণের মধ্য দিয়ে পরিকল্পিতভাবে এই কাজ করে থাকে, তবে এটি স্পষ্টতই:
Rome Statute অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ (War Crime)
মানবতাবিরোধী অপরাধ (Crime Against Humanity)
বেসামরিক জনগণের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের (Chemical Warfare) শামিল, যা Chemical Weapons Convention অনুসারে সম্পূর্ণ অবৈধ। এ ধরনের কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবি রাখে।
বিশ্ব বিবেকের কাছে এ ঘটনা নিঃসন্দেহে একটি অগ্নিপরীক্ষা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা কিংবা দুর্বল প্রতিক্রিয়া শুধু গাজার মানুষদের প্রতি নয়, মানবতার পুরো কাঠামোর ওপরই প্রশ্নচিহ্ন টেনে দেয়।