আজ বুধবার ঢাকার তিনটি এলাকায় র্যাব ও ডিজিএফআইয়ের গোপন বন্দীশালা ও টর্চার সেল ( আয়নাঘর পরিদর্শন ) পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছয় জন উপদেষ্টা, দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকর্মী, আইসিটির চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, গুম কমিশনের সদস্য ও গুমের শিকার আট জন ব্যক্তি।
আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে প্রধান উপদেষ্টা গণমাধ্যমের সামনে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “যা দেখেছি তা বর্ণনা করার মতো নয়, এটি অবর্ণনীয়। যদি বর্ণনা করতেই হয়, তবে বলবো এটি এক বিভৎস দৃশ্য। মানবিকতা থেকে বহু দূরে এসব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে। গুমের শিকার যারা বেঁচে আছেন, তারা যে অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন, তা অবিশ্বাস্য এবং নৃশংস অত্যাচারের চিত্র তুলে ধরে। বিনাদোষে তুলে এনে টর্চার করা হয়েছে। এটা কি আমাদের সমাজ? এই সমাজই কি আমরা গড়েছিলাম?”
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “গত সরকার সর্বক্ষেত্রে আইয়ামে জাহেলিয়ার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করেছে, এই বন্দীশালা ও নির্যাতন কেন্দ্র তার একটি নমুনা। যে খুপরির মধ্যে বন্দীদের রাখা হয়েছে, গ্রামে মুরগির খাঁচাও তার চেয়ে বড়। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর তাদের এভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছে, ন্যূনতম মানবিক অধিকার থেকেও তারা বঞ্চিত।”
এটি আমাদের সবার ব্যর্থতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যারা এসব কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, তারা আমাদেরই সন্তান, ভাই, আত্মীয়। আমরা যদি এই সমাজকে নিপীড়নের এই চূড়ান্ত রূপ থেকে বের করে আনতে না পারি, তাহলে সমাজ টিকে থাকতে পারবে না।”
প্রধান উপদেষ্টা গুম কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “তারা কোদাল হাতে দেয়াল ভেঙে এসব টর্চার সেল আবিষ্কার করেছে। এই নির্যাতনের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে, অন্যথায় আমরা এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাব না।”
Leave a Reply