গত শুক্রবার রাতে স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় কর্ডোভা শহরের বিশ্বখ্যাত মসজিদ-রূপান্তরিত ক্যাথেড্রালে আগুন লাগে। তবে দমকল বাহিনীর দ্রুত ও দক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণের কারণে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে এবং বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো যায়।
স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে ক্যাথেড্রালের আলমানজর নেভসের একটি চ্যাপেলে আগুন লেগে শুরু হয়। আগুনের সূত্রপাতের পেছনে একটি বৈদ্যুতিক মেকানিক্যাল স্যুইপিং মেশিনে শর্ট সার্কিট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। পাঁচটি ফায়ার ইঞ্জিন ও একটি ক্রেন নিয়ে দমকল কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আশপাশের এলাকা দ্রুত খালি করা হয়, যাতে তাদের কাজ নির্বিঘ্নে করা যায়।
মেয়র জোসে মারিয়া বেলিদো আগুন নিয়ন্ত্রণে আনায় দমকল বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, “দ্রুত ও অসাধারণ পদক্ষেপের ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। আগুন সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে এসেছে, আর আমরা আশ্বস্ত যে পুনরায় কোনো ঝুঁকি থাকবে না।”
এই স্থানে ঐতিহাসিক কর্ডোভা মসজিদটি ৮ থেকে ১০ শতকের মধ্যে মুসলিম শাসক আবদুল রহমান উমাইয়াদের সময় নির্মিত হয়েছিল। পরে ১৩ শতকে খ্রিস্টান রাজা ফেরদিনান্দ তৃতীয়ের অধীনে এটি ক্যাথেড্রালে রূপান্তরিত হয়। এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃত।
আগুন লাগার ঘটনায় শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ধোঁয়া ও আগুনের শিখা দেখা গিয়েছিল, যা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করেছিল। তবে দ্রুত আগুন নেভানোর কারণে বড় ধরনের ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
আগুন লাগার পর পরদিন শনিবার থেকে এই স্মৃতিস্তম্ভটি দর্শনার্থীদের জন্য পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্ত অংশটুকু ছাড়া পুরো এলাকা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে।
বিশ্ব মুসলমানদের জন্য কর্ডোভার এই মসজিদ – ক্যাথেড্রাল একটি অমূল্য ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় প্রতীক। আগুন লাগার এই ঘটনার পরও তার অক্ষুণ্ণ থাকা অনেকের কাছে সান্ত্বনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০১৯ সালের প্যারিসের নোটর ড্যাম ক্যাথেড্রালের আগুনের স্মৃতি মনে পড়লেও কর্ডোভায় বড় ধরনের ক্ষতি না হওয়ায় এই ঘটনা অনেকটা স্বস্তির।