কোরবানির ঈদ সামনে রেখে প্রতিবছরের মতো এবারও জামালপুরের ইসলামপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে ‘ক্যাটল স্পেশাল’ ট্রেন। ট্রাকের তুলনায় কম খরচ, নিরাপদ পরিবহন এবং ঝামেলামুক্ত ভ্রমণের সুযোগ থাকায় গরু ব্যবসায়ী ও খামারিদের কাছে এই ট্রেন এখন দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কম খরচে গরু পরিবহন
যানজট মুক্ত, নিরবিচারে ভ্রমণ
গরু সুস্থ থাকে
ট্রাকে থাকা ঝুঁকি ও চাঁদাবাজি থেকে মুক্তি
সময় বাঁচে ও নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছানো যায়
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২ জুন) বিকাল সাড়ে ৪টায় ইসলামপুর বাজার রেলস্টেশন থেকে প্রথম ক্যাটল ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এরপর বিকাল সাড়ে ৫টায় ছেড়ে যায় দ্বিতীয় ট্রেন। প্রতিটি ট্রেনে ২৫টি ওয়াগন রয়েছে। আর প্রতি ওয়াগনে তোলা হয়েছে ১৬টি করে গরু। এই দুই ট্রেনে মোট ৮০০টি গরু ঢাকার পথে রওনা দেয়। মঙ্গলবার বিকালে তৃতীয় ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছাড়বে বলে জানানো হয়েছে। তিনটি ট্রেনে মোট ৭৫টি ওয়াগনে প্রায় ১২০০টি গরু ঢাকায় পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতি ওয়াগনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার টাকা। অর্থাৎ, প্রতি গরু পরিবহনে খরচ পড়ছে ৫০০ টাকা। যেখানে ট্রাকে করে ঢাকায় গরু আনতে খরচ পড়ে প্রায় দ্বিগুণ। তাছাড়া রাস্তার যানজট, চাঁদাবাজি এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকেই। ফলে গরু ব্যবসায়ী ও খামারিরা ট্রেনকেই এখন বেশি ভরসা করছেন।
গরু ব্যবসায়ী সুমন মিয়া বলেন, আগে ট্রাকে করে গরু আনতে গেলে অনেক ভোগান্তি হতো। বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা দিতে হতো। যানজটের কারণে সময়ও বেশি লাগত। ট্রেনে গেলে এসব ঝামেলা নেই। গরুও সুস্থ থাকে। আরেক ব্যবসায়ী ছাবের আলী জানান, ট্রাকে গেলে যে খরচ হয়, ট্রেনে গেলে তার অর্ধেক। ঝুঁকিও কম। তাই এখন সবাই ক্যাটল স্পেশাল ট্রেনকেই পছন্দ করছেন।
ইসলামপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার শাহীন মিয়া বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর ক্যাটল ট্রেনের সাড়া আরও বেশি। ব্যবসায়ীরা ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে বুকিং করেছেন। কম ভাড়া, নিরাপদ পরিবহন এবং ঝামেলামুক্ত যাত্রার জন্য এই ব্যবস্থার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, অবিক্রিত গরু নিয়ে ঢাকায় গিয়ে ফেরার জন্য যেন ফিরতি ট্রেনের ব্যবস্থাও করা হয়। রেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছে বলে জানান স্টেশন মাস্টার।
এ বছর ইসলামপুর থেকে তিনটি ক্যাটল ট্রেনে ৭৫টি ওয়াগনে প্রায় ১২০০টি গরু ঢাকায় পাঠানো হবে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে ঈদ সামনে রেখে গরু পরিবহনে কোনো সমস্যা হবে না এবং স্বল্প খরচে, নিরাপদে গরু পৌঁছানো সম্ভব হবে।