রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে সফররত বাংলাদেশি শীর্ষ আলেমদের প্রতিনিধি দল দেশটির জ্বালানি ও পানি মন্ত্রী মোল্লা আবদুল লতিফ মনসুর এবং সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মাওলানা আব্দুল হক, মাওলানা মনির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা মাহবুবুল্লাহ কাসেমী, মধুপুরের পীর মাওলানা আব্দুল হামিদ ও মুফতী মুহাম্মদ হিদায়াতুল্লাহ।
বাংলাদেশি আলেমদের আফগানিস্তান সফর আয়োজন ও ব্যবস্থাপনা করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা প্রস্পার আফগানিস্তান, যা যুদ্ধোত্তর আফগানিস্তানে সংহতি ও উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে আলেম, চিকিৎসক ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে আসছে। এ সফরের মূল লক্ষ্য ছিল আফগানিস্তান-বাংলাদেশের জনগণ ও নেতৃত্বের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করা এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি করা।
উভয় বৈঠকে আফগান কর্মকর্তারা বাংলাদেশি আলেমদের স্বাগত জানান। তারা বলেন, ইসলামী মূল্যবোধভিত্তিক শাসনব্যবস্থা এবং আত্মনির্ভরশীল জাতীয় উন্নয়নের অঙ্গীকারের মাধ্যমে দেশটি নতুন ধরণের শাসনপদ্ধতি বিশ্বকে প্রদর্শন করতে চায়।
সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ মন্ত্রণালয়ে আলেমরা রাষ্ট্রের নৈতিক ও শিক্ষা-সংক্রান্ত দায়িত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। তারা লক্ষ্য করেন, সমাজে সৎকর্ম প্রসারের জন্য এ মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা বিশ্বব্যাপী বিরল ও অনন্য।
ডেপুটি মন্ত্রী সাঈদ আহমাদ শহীদ খাইল বলেন, “আমি আপনাদের স্বাগত জানাতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত। আপনারা সরাসরি আমাদের কাজ দেখার জন্য এসেছেন। আশা করি ভবিষ্যতেও বাংলাদেশি মাশায়েখ আমাদের সফর করবেন এবং দেশের সব স্তরের মানুষ আমাদের সমাজের বাস্তব চিত্র নিজ চোখে দেখবেন।”
মন্ত্রী আরও বলেন, “আমাদের মন্ত্রণালয় সত্যিই অনন্য। পৃথিবীর অন্য কোনো সরকার সমাজে নৈতিকতা প্রতিষ্ঠা ও মানুষকে সৎপথে পরিচালনার জন্য বিশেষ মন্ত্রণালয় তৈরি করেনি। আমরা চাই মুসলিম বিশ্ব ইসলামের ন্যায়বিচার বাস্তবে প্রত্যক্ষ করুক।”
দিনের পরবর্তী বৈঠকে জ্বালানি ও পানি মন্ত্রী মাওলানা আবদুল লতিফ মনসুর প্রতিনিধি দলকে আতিথ্য জানান। তিনি দেশের অবকাঠামোগত প্রকল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি কৌশল সম্পর্কে আলেমদের ব্রিফ করেন। মন্ত্রী বলেন, “আমরা পাঁচটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছি, যার মধ্যে একটি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। আফগানিস্তানের ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও আমাদের প্রয়োজন মাত্র ১৫ হাজার মেগাওয়াট। বাকি বিদ্যুৎ আমরা রপ্তানি করতে পারব, যা প্রমাণ করবে নতুন আফগানিস্তান বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গে উন্নয়ন ভাগাভাগি করতে প্রস্তুত।”
মন্ত্রী আরও যোগ করেন, “আপনাদের স্বাগত জানাতে পেরে আমি আনন্দিত। আশা করি আমাদের দুই দেশ শক্তিশালী কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলবে।”
বাংলাদেশি আলেমরা সফর জুড়ে আফগান কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা ও স্বচ্ছতার প্রশংসা করেন। তারা দুই দেশের ধর্মীয়, আলেম ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবেন।