ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাকিমপুর সীমান্ত ফাঁড়ি এলাকায় বাংলাদেশ পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আটক করেছে। শনিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সাতটার মধ্যে নিয়মিত টহলের সময় ওই কর্মকর্তা ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করলে বিএসএফ সদস্যরা তাকে আটক করে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আটক ব্যক্তি বাংলাদেশের একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব পুলিশ (ASP) আরিফুজ্জামান। তিনি ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে কর্মরত ছিলেন। তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্বে অনুপস্থিত ছিলেন। গত বছরের ১৪ অক্টোবর থেকে তিনি আর দপ্তরে যোগ দেননি বলে জানা গেছে। এর আগে তিনি রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ছিলেন। ভারতীয় বিএসএফ কর্মকর্তা ও স্থানীয় পুলিশ জানাচ্ছেন, তিনি অবৈধভাবে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন।
গত ১৪, আগস্ট বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনির স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে , বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় আরিফুজ্জামানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার ৩(খ) ও ৩(গ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ ও পলায়ন’ শাস্তিযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বিএসএফ জানিয়েছে, আটক করার পর তল্লাশিতে তার কাছ থেকে বেশ কয়েকটি পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়, যা নিশ্চিত করে তিনি বাংলাদেশ পুলিশের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ভারতীয় কর্মকর্তারা এ ঘটনাকে বিরল উল্লেখ করে বলেছেন, একজন বাংলাদেশি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার অননুমোদিতভাবে সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা এবং বিএসএফের হাতে ধরা পড়া নজিরবিহীন। কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, তিনি কেন ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিলেন তা জানতে তদন্ত চলছে।
এ ঘটনায় এখনো বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ভারতীয় কর্মকর্তারা বলছেন, সীমান্তে এমন অনুপ্রবেশ নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করে এবং এজন্য বিএসএফ, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সমন্বয় জোরদার করা হচ্ছে।
এই ঘটনায় আবারও স্পষ্ট হলো যে, ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্ত, বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা চোরাচালান ও অবৈধ অনুপ্রবেশের ঝুঁকিতে রয়েছে। সীমান্তে কঠোর নজরদারি ও যৌথ নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ভারতীয় কর্মকর্তারা।