বাংলাদেশ ২০২৬ সালের নভেম্বরে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে এলডিসি থেকে বের হলেও যুক্তরাজ্যের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা মিলবে আরও দীর্ঘ সময়। ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক জানালেন, ডেভেলপিং কান্ট্রিজ ট্রেডিং স্কিম (ডিসিটিএস) আওতায় বাংলাদেশ ২০২৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ৯৯ দশমিক ৮ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। এমনকি ২০২৯ সালের পরও ৯২ শতাংশ পণ্য এই সুবিধার আওতায় থাকবে, যার মধ্যে দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক অন্যতম।
গত সোমবার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংগঠন আইসিসি বাংলাদেশের (আইসিসিবি) কার্যালয়ে এক বৈঠকে এই তথ্য জানান ব্রিটিশ হাইকমিশনার। সেখানে আইসিসিবি সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সহসভাপতি এ. কে. আজাদ ও নাসের এজাজ বিজয়সহ নির্বাহী বোর্ডের সদস্য ও উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে আইসিসিবি সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের শক্তিশালী ও গতিশীল। ঐতিহাসিক বন্ধন, জনগণের পারস্পরিক যোগাযোগ এবং দৃঢ় বাণিজ্যের ভিত্তিতেই এই সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্প খাতে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি গন্তব্য। তাছাড়া আর্থিক সেবা, জ্বালানি এবং শিক্ষা খাতেও ব্রিটিশ কোম্পানির সক্রিয়তা রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই উন্নয়নের মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা আরও বাড়বে এবং অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব হবে আরও দৃঢ়।
এদিকে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রশংসা করেন। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে রপ্তানি পণ্য বৈচিত্র্যকরণ, উচ্চশিক্ষা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বিমান চলাচল এবং জলবায়ু অর্থায়নে আরও সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
বৈঠকে আইসিসিবি প্রতিনিধিরা দক্ষতা উন্নয়ন, উচ্চশিক্ষার জন্য বৃত্তি এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের আরও সহায়তা চেয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য এই শুল্কমুক্ত সুবিধা ধরে রাখা অত্যন্ত ইতিবাচক। কারণ যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার। এলডিসি পরবর্তী সময়েও এই সুবিধা বহাল থাকলে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।