আফগানিস্তানের মাটিতে কোনো “বিদেশি” শক্তির নিয়ন্ত্রণ মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন আফগানিস্তানের তালেবান শাসিত সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। ভারত সফরে এসে দিল্লিতে আফগান দূতাবাসে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। এটি তার প্রথম ভারত সফর, যা জন্য জাতিসংঘের বিশেষ ছাড় প্রয়োজন হয়েছিল, কারণ তিনি “নিষিদ্ধ সন্ত্রাসীদের” তালিকায় রয়েছেন।
ভারত সফরের দ্বিতীয় দিনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুত্তাকি। বৈঠকে জয়শঙ্কর কাবুলে ভারতের টেকনিক্যাল মিশনকে দূতাবাসের মর্যাদায় উন্নীত করার ঘোষণা দেন। এর মাধ্যমে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী হচ্ছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুত্তাকি আরও জানান, আফগানিস্তানে শান্তি রয়েছে এবং নারীদের অধিকার সংরক্ষিত আছে। যুক্তরাষ্ট্রের বারগাম বিমান ঘাঁটিতে অন্য কারো নিয়ন্ত্রণ মেনে নেওয়া হবে না বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে সতর্কও করেছেন যে আফগান ভূখণ্ডকে ব্যবহার করার চেষ্টা যেন না করা হয়।
মুত্তাকি ভারতকে আফগানিস্তানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের সময় ভারতই প্রথম পাশে দাঁড়িয়েছিল। এছাড়া ভারত কাবুলে নতুন ভিসা ব্যবস্থা চালু করেছে, খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে এবং আফগান শরণার্থীদের পুনর্বাসনে সহায়তা করবে। ভারতের পক্ষ থেকে ২০টি অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করা হবে, যার মধ্যে পাঁচটি ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে শুধু পুরুষ সাংবাদিকদের উপস্থিতি চোখে পড়েছে, যা নিয়ে কিছুক্ষেত্রে সমালোচনা হয়েছে। মুত্তাকি হিন্দিতেও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
দুই দেশের মধ্যে চলতি বছরের এপ্রিলে নতুন ভিসা ব্যবস্থা চালু এবং বাণিজ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। ভারত-আফগান সম্পর্কের মজবুত করার জন্য উচ্চস্তরের বৈঠকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
মুত্তাকি স্পষ্টভাবে বার্তা দিয়েছেন, আফগান ভূখণ্ডে শান্তি এবং অগ্রগতি রক্ষা করতে কেউ আফগানদের “সাহস পরীক্ষা” করতে পারবেন না। তিনি বলেন, সীমান্তবর্তী অঞ্চলে পাকিস্তানের কিছু কর্মকাণ্ড ভুল এবং ৪০ বছর পর আফগানিস্তানের অর্জিত শান্তি ও অগ্রগতি রক্ষার জন্য সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।