আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ৮০০ জনে। আহত হয়েছেন দুই হাজার ৫০০ জনেরও বেশি। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
রোববার (৩১ আগস্ট) স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারক আরটিএ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী কুনার প্রদেশের নুরগাল জেলা। নানগারহার ও লাঘমানসহ একাধিক প্রদেশে হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
আফগান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, হতাহতের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। কেবল কুনারেই শত শত মানুষ নিহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নানগারহারে কমপক্ষে ১২ জন নিহত ও ২৫৫ জন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
ভূমিকম্পে কয়েকটি গ্রাম পুরোপুরি ধসে গেছে। কুনারের মাজার ভ্যালি এলাকায় একটি গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে মানবিক সহায়তামূলক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন। অনেক নারী, শিশু ও বৃদ্ধ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন।
ভূমিকম্পের পর আফগান প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জরুরি দলগুলো দুর্গত এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে। ইতোমধ্যে নানগারহার বিমানবন্দর থেকে ৩৫টি হেলিকপ্টার ফ্লাইটে অন্তত ৩৩৫ জন আহতকে আঞ্চলিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় চিকিৎসক ও ওষুধ পাঠানো হয়েছে।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে, যা ধ্বংসাত্মক প্রভাব বাড়িয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রাথমিক ভূমিকম্পের পর আরও দুটি কম্পন (৫.২ ও ৪.৭ মাত্রার) অনুভূত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘের আফগানিস্তান অফিস জানিয়েছে, তারা ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি সহায়তা দিচ্ছে। তবে দুর্গম এলাকার দুর্বল অবকাঠামো ও ভাঙাচোরা সড়কের কারণে সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কুনার ও নানগারহারের বহু এলাকায় ঘরবাড়ি কাঁচা মাটির হওয়ায় সেগুলো সহজেই ধসে পড়েছে। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ার শঙ্কা থেকে যাচ্ছে।