
হাঁটি হাঁটি-পা পা করে এক বছর পূর্তি হলো দৈনিক সাবাস বাংলাদেশের। গতবছর এই দিনে অর্থাৎ ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ রোদ ঝলমলে বুধবারে ‘মাথা নোয়াবার নয়’ স্লোগান নিয়ে যাত্রা শুরু করে দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ। আমাদের লক্ষ ছিল বামপন্থী মিডিয়াগুলোর চাপিয়ে দেওয়া জনবিরোধী কৃত্রিম ন্যারেটিভের বিপরীতে দেশের অধিকাংশ মানুষের ভাবাদর্শ ও বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটানোর একটি প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করা। জনগণের মনের কথা মুখের ভাষায় যে ন্যারেটিভে প্রকাশিত হয়, মিডিয়ায় জায়গা না পেয়ে অবহেলায় গড়াগড়ি খায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, সেগুলোকেই অতি যত্নে কুড়িয়ে নিয়ে মূলধারার মিডিয়ায় প্রদর্শন করার মানসও ছিল আমাদের।
আমাদের অভীপ্সা ছিল সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ খবর প্রকাশে আপোষহীন থাকা। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের বিখ্যাত ‘দুর্মর’ কবিতা থেকে চয়িত আমাদের পোর্টালের নাম ‘সাবাস বাংলাদেশ’ ও শ্লোগান ‘মাথা নোয়াবার নয়’ তারই ইঙ্গিতবাহী।
বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের ধর্মবিশ্বাস ইসলামের প্রতি গভীরভাবে শ্রদ্ধাশীল আমরা, সহনশীল অন্যান্য সকল ধর্মমতের প্রতিও। সাবাস বাংলাদেশ সাতচল্লিশ, বাহান্ন, একাত্তর ও চব্বিশে বিশ্বাসী থেকে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু দেখতে চায়।
বর্ষপূর্তিতে প্রশ্ন আসতেই পারে, নিজেদের লক্ষ্যে কতটা সফল হয়েছি আমরা। নিরেট সত্য উত্তর দিতে গেলে বলতে হয়, গত একটি বছর আমাদের লড়াইটা ছিল নিজেদের সাথে, কেবলই টিকে থাকার লড়াই। কত নাম জানা-না জানা নিউজ পোর্টাল প্রতিদিন বাংলাদেশে জন্ম নিচ্ছে বুদ্বুদের মতো, আবার হারিয়েও যাচ্ছে। একবুক আবেগ ও স্বপ্ন নিয়ে সাবাস বাংলাদেশ জন্ম নিয়েছিল, কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর দেখা গেল বাস্তবতা বড়ই নির্মম। একটি মিডিয়া চালু করার পূর্বে যত প্রস্তুতি নেওয়া হয়, সাবাস বাংলাদেশ ততটা প্রস্তুতি নিয়ে জন্মেনি। পুঞ্জীভূত স্বপ্নের ঘোরে, সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত অবস্থায় নজরুলের কবিতার সেই ধূমকেতুর মতো আচমকা মিডিয়া আকাশে উদয় হয়েছিল সাবাসের। যাদের প্রত্যয়, ব্যাকুলতা ও শ্রমে সাবাসের জন্ম তারা কেউই মিডিয়া জগতে ততটা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ছিলেন না। এই পূর্বাভিজ্ঞতা না থাকা সাবাস বাংলাদেশের জন্য একদিক দিয়ে যেমন সাপ হয়েছে, অপর দিক দিয়ে তেমন হয়েছে বরও। প্রতিষ্ঠার পর নিজেকে গুছিয়ে নেওয়া, কলেবর বৃদ্ধি, সংবাদকর্মী সংগ্রহ, পরিচিতি ও বিস্তারণ, ভিত্তিমূল স্থাপন, জনগণের আস্থা অর্জন ইত্যাদি কাজে নেমে রীতিমতো গলদঘর্ম হতে হয়েছে সাবাস কর্মীদের। অপরদিকে, কোনো পূর্বাভিজ্ঞতা না থাকায় সাবাসের সামনে কোনো আপোষ, কোনো জরা, কোনো সীমার কাছে হার মানার নজির ছিল না। ‘মানতে হয়’ বলে চাপিয়ে দেওয়া কোনোকিছুর কাছে সাবাস নতি স্বীকার করতেই শেখেনি। এই যুদ্ধ করতে করতেই একটু একটু করে রঙ ধরেছে সাবাসের গায়ে, প্রায় গুছিয়ে উঠতে পেরেছি আমরা। পাশাপাশি মাত্র এক বছরে ফেসবুকে চার লক্ষ পাঠকের আস্থা অর্জন করে নিতে সক্ষম হয়েছি আমরা। ইউটিউবেও প্রায় চল্লিশ হাজার সাবস্ক্রাইবার নিয়ে মিডিয়া জগতে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছে সাবাস। বয়সে নবীন হয়েও ইতোমধ্যে মিডিয়া জগতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে শুরু করেছে সাবাস বাংলাদেশ; যেমন: দেশে প্রথম ভুয়া খবর প্রতিরোধী নিউজের কিউআর কোডযুক্ত ‘স্মার্ট ফটোকার্ড’ এর প্রচলন করি আমরাই। এই এক বছরে ঝোড়ো হাওয়ায় প্রদীপের আলোর মতো নিভু নিভু অবস্থান থেকে কেবল স্থির হতে পেরেছে সাবাস, সামনের দিনগুলোতে ডালপালা মেলে বিকশিত হওয়ার পূর্বাভাস। এভাবেই একদিন আরো আরো পল্লবিত হয়ে এক মহীরূহে পরিণত হবে আপনাদের প্রিয় পোর্টাল দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ। দেশের সকল সংবাদমাধ্যমকে সরিয়ে গণআস্থায় প্রথম স্থান দখল করবে নবীণতর এই সংবাদমাধ্যমটি- ১ম বর্ষপূর্তীতে এই আমাদের অঙ্গীকার। বরাবরের মতো সামনের দিনগুলোতেও সাবাসের সকল লেখক, পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদেরকে এভাবে পাশে থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
কে. কিউ. হাসান
সম্পাদক
দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ