
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) ফের বঙ্গপ্রথা চালু হওয়ার আশঙ্কা করছে শিক্ষার্থীরা। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর বঙ্গপ্রথা বিলুপ্ত করা হলেও, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় আবার সেই সংস্কৃতি ফিরে আসার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত ২২ অক্টোবর রাতে ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্স অনুষদের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেসেঞ্জার গ্রুপে কথা কাটাকাটি থেকে শুরু হয় উত্তেজনা। বিষয়টি সমাধানের জন্য রাত ৯টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে সমবেত হন। আলোচনার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সিনিয়রদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও, হলে ফেরার সময় আবারও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা।
সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়লে তা বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও উত্তেজনা সৃষ্টি করে। পরে বিজয়-২৪ হলের সামনে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ক্যাম্পাসে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
উল্লেখ্য, শেকৃবিতে ছয়টি বঙ্গ রয়েছে— দক্ষিণ বঙ্গ (বরিশাল-খুলনা অঞ্চল), উত্তর বঙ্গ (রাজশাহী-বগুড়া অঞ্চল), পাবনা-সিরাজগঞ্জ বঙ্গ, কুমিল্লা বঙ্গ, ময়মনসিংহ বঙ্গ এবং ঢাকা বঙ্গ। অতীতে এসব বঙ্গকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার, র্যাগিং ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, “ক্যাম্পাসে আবারও বঙ্গপ্রথা চালু হওয়ার চেষ্টা চলছে। কিছু সিনিয়র ব্যক্তি সাম্প্রতিক সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে বঙ্গীয় বিভাজন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। এটা হলে পুরনো রাজনৈতিক কালচার আবার ফিরে আসবে।”
এই বিষয়ে শেকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফ বলেন, আমরা চাই না শেকৃবিতে বঙ্গপ্রথা পুনরায় চালু হোক। আমি হলে প্রভোস্টদের নির্দেশ দিয়েছি— সিট বরাদ্দ কেবল হলের নিয়ম অনুযায়ী হবে, কোনোভাবেই বঙ্গীয়ভাবে নয়।” তিনি আরও বলেন, “যে কোনো অপরাধের ক্ষেত্রে তদন্ত করে অপরাধের ধরণ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।