ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক, কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। খবরটি নিশ্চিত করেছেন প্রকাশনা সংস্থা অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম।
[ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন]
জানা যায়, গত ৩ অক্টোবর রাজধানীর ধানমন্ডিতে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে (ইউল্যাব) যাওয়ার পথে গাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে থাকা চালক ও আশপাশের লোকজনের সহায়তায় দ্রুত তাকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে হার্টে দুটি রিং (স্টেন্ট) বসানো হয়। তবে ৪ অক্টোবর থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। অক্সিজেন লেভেল কমে যায় এবং ফুসফুসে পানি জমে। পরিস্থিতি গুরুতর হলে রোববার সন্ধ্যায় তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা লাইফ সাপোর্টে থাকার পর কিছুটা উন্নতি দেখা গেলেও পরে আবার অবস্থার অবনতি ঘটে। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার বিকেল ৫টায় চিকিৎসকেরা লাইফ সাপোর্ট সরিয়ে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে। শনিবার সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহ নেওয়া হবে। এরপর বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হতে পারে।
১৯৫১ সালে সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও ময়মনসিংহ এমসি কলেজ থেকে শিক্ষা লাভের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন এবং ২০১৮ সালে অবসর গ্রহণ করেন। পরে তিনি ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে (ইউল্যাব) অধ্যাপনা শুরু করেন। ২০২৩ সালে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক করা হয়।
শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক হিসেবে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশের সাহিত্যাঙ্গনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। কথাসাহিত্য, প্রবন্ধ, অনুবাদ ও সমালোচনায় তার অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৯৬ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং ২০১৮ সালে একুশে পদক পান। তার মৃত্যুতে সাহিত্য ও শিক্ষাঙ্গনে নেমে এসেছে গভীর শোক।