অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান তাঁর ফেসবুক পেজে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের একটি ছবি পোস্ট করেছেন। ছবিতে দেখা যায়, বাংলাদেশের আসনচিহ্নের পাশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। ছবির নিচে লেখা রয়েছে— “United Bangladesh in United Nations”।
এই পোস্টের মাধ্যমে তিনি মূলত বার্তা দিতে চেয়েছেন যে, চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা ও অস্থিরতার মধ্যেও বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঐক্যবদ্ধভাবে উপস্থিত রয়েছে। সরকারের প্রধানের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এ ছবি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক মতভেদ সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঐক্যবদ্ধ উপস্থিতির প্রতীক।জাতিসংঘের মঞ্চে বাংলাদেশ একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করছে—এটাই ছবির মূল বক্তব্য।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “United Bangladesh” শব্দগুচ্ছ ব্যবহারের মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, অভ্যন্তরীণ বিভাজন থাকলেও বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বিত অবস্থানে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরতে সহায়ক।
ফেসবুক পোস্টে অনেকে মন্তব্য করছেন, এ ধরনের প্রতীকী বার্তা দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ঐক্যের প্রত্যাশা জাগাতে পারে। তবে অন্য একটি অংশের মতে, কেবল ছবির মাধ্যমে ঐক্যের বার্তা দেওয়া যথেষ্ট নয়; দেশের ভেতরে কার্যকর রাজনৈতিক সমঝোতা প্রতিষ্ঠাই আসল চ্যালেঞ্জ।
অনেকেই ছবিটিকে ইতিবাচকভাবে দেখেছেন।
Mohammed Irfanur লিখেছেন, “সবাইকে একসাথে দেখে খুব ভালো লাগলো, এইরকম সুন্দর একটা বাংলাদেশ চাই।”
Abu Obaida আশা প্রকাশ করেছেন, “পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে এই সুন্দর মুহূর্তগুলো বেঁচে থাকবে।”
Ahsanul Kabir মন্তব্য করেছেন, “Let’s unite very strongly।”
ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ নামের এক ব্যবহারকারী বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন যে, সরকারটি জাতীয় ঐকমত্য ও আদালতের নির্দেশনার ভিত্তিতে গঠিত। তাঁর মতে, এটি একটি বৈধ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যদিও আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি (PR) বর্তমান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত নয়।
Jahid Hasan Himel ব্যক্তিগতভাবে লিখেছেন, “আপনাকে হারিয়ে ফেললে বাঙালি জাতি অনেক আফসোস করবে।”
Nur Mohammad Raj প্রশংসা করেছেন টাইটেলটির—“চমৎকার টাইটেল।”
জাতিসংঘের অধিবেশনে অংশ নিতে গিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের এই ছবি এবং বার্তা দেশীয় রাজনৈতিক আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
তবে অনেকে ছবিটিকে কেবল প্রতীকী প্রদর্শনী হিসেবে দেখছেন।
Farhad Hossain প্রশ্ন তুলেছেন, “যারা ফখরুলের পাশে বসে আছেন তারা আসলেই বক্তৃতা বুঝছেন কি না?” তাঁর মতে, তরুণ নেতৃত্বকে এখানে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত ছিল।
Sheikh Ashraf Nazrul লিখেছেন, “বাংলাদেশের অর্ধেক মানুষকে বাদ দিয়ে ইউনাইটেড কেমনে হয় জানি না! এটা কোন ধরনের প্রহসন?”
Manjurul Karim সংক্ষেপে বলেছেন, “গাল গল্প সব।”
ফেসবুকে এই পোস্টের পর স্পষ্ট হয়েছে যে, জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলকে নিয়ে জনগণের মধ্যে যেমন আশা জাগছে, তেমনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরদের পক্ষ থেকে সমালোচনাও উঠছে। সমর্থকরা এটিকে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে দেখছেন, আর সমালোচকরা রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্ন তুলছেন। তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ঐক্যবদ্ধ উপস্থিতি দেশের রাজনৈতিক আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।