স্থানীয় সময় শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, আফগানিস্তান যদি বাগরাম বিমান ঘাঁটি ফেরত না দেয় তবে “খারাপ কিছু” ঘটতে চলেছে। নিজের মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া বার্তায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প জানান, বাগরাম ঘাঁটি পুনরুদ্ধারে প্রচেষ্টা চলছে। তিনি অভিযোগ করেন, চীনের কৌশলগত অবস্থানের কাছাকাছি হওয়া সত্ত্বেও কোনো বিনিময় ছাড়াই মার্কিন সেনারা ঘাঁটিটি ছেড়ে গেছে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে এই ঘাঁটি স্থাপন করেছিল। দুই দশক ধরে এটি ছিল মার্কিন সামরিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র। ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর সেনা প্রত্যাহারকালে বাগরাম ছাড়তে হয় যুক্তরাষ্ট্রকে। ওই বছরের ৩০ আগস্ট কাবুল ছেড়ে মার্কিন সেনাদের শেষ দল বেরিয়ে যায়।
শনিবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পকে যখন প্রশ্ন করা হয় ঘাঁটি পুনরুদ্ধারে সেনা পাঠানো হবে কিনা—তিনি সরাসরি উত্তর দেননি। বলেন, “এটা নিয়ে এখন আমরা কথা বলব না।” তবে যোগ করেন, “আমরা আফগানিস্তানের সঙ্গে কথা বলছি। আমরা ওই ঘাঁটি ফেরত চাই, খুব শিগগিরই চাই। যদি না দেয়, তবে আমি কী করব সেটা সবাই দেখবে।”
অন্যদিকে তালেবান সরকার ওয়াশিংটনের পরিকল্পনাকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জাকির জালালি সামাজিক মাধ্যমে জানান, মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে আলোচনায় বসতে কাবুল প্রস্তুত। তিনি বলেন, “আফগানিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রস্তুত। কিন্তু আফগান মাটিতে বিদেশি সেনা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।”
বিশ্লেষকদের মতে, বাগরাম ঘাঁটি কেবল একটি সামরিক বিমানঘাঁটি নয়—বরং গোটা অঞ্চলের জন্য কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র। এটি পুনরুদ্ধার করতে গেলে বড় ধরনের সামরিক উপস্থিতি, প্রতিরক্ষা ও সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতিক্রিয়ায় নতুন ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।