কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান ভারতীয় উড়োজাহাজের জন্য আকাশসীমা নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও এক মাস বাড়িয়েছে। পাকিস্তান এয়ারপোর্টস অথরিটি (PAA) সেপ্টেম্বরে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আগামী ২৪ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত ভারতীয় বিমান পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারবে না।
২০২৪ সালের এপ্রিলে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর থেকে এই উত্তেজনার সূত্রপাত। পাকিস্তান ঘটনাটিকে ভারতের দমননীতির ফল হিসেবে চিহ্নিত করে, অন্যদিকে ভারত অভিযোগ তোলে পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। এর জের ধরে পাকিস্তান ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় এবং পাল্টা ভারতও পাকিস্তানি উড়োজাহাজকে নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহার নিষিদ্ধ করে।
এই পদক্ষেপে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলো বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগোসহ আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী ফ্লাইটগুলোকে দীর্ঘ বিকল্প রুটে যেতে হচ্ছে। এতে জ্বালানি খরচ বেড়েছে, ফ্লাইট সময়ও বেড়েছে, ফলে যাত্রীদের ভোগান্তিও বেড়েছে। পাকিস্তানের ক্ষতি তুলনামূলকভাবে সীমিত, কারণ তাদের আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল সীমিত। তবে রাজনৈতিকভাবে ইসলামাবাদ প্রতিরোধমূলক অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, আকাশসীমা বন্ধ রাখা ভারতের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করার কৌশল। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সীমান্তে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও আকাশসীমা নিষেধাজ্ঞা আঞ্চলিক উত্তেজনার স্থায়ী প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে দক্ষিণ এশিয়ার বিমান শিল্পে এর প্রভাব আরও গভীর হতে পারে। অন্যান্য আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সও রুট পরিবর্তনে বাধ্য হচ্ছে। আলোচনার উদ্যোগ না নিলে এই নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘায়িত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র, চীন বা সৌদি আরবের মতো প্রভাবশালী শক্তির মধ্যস্থতা ছাড়া ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ।