মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের খিউকতাও শহরের থায়েত থাপিন গ্রামের একটি বেসরকারি বোর্ডিং স্কুলে সেনা জান্তার বিমান হামলায় অন্তত ১৮ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে কিশোর শিক্ষার্থীও রয়েছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে এ হামলা চালানো হয় বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইরাবতি ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, একটি জেট যুদ্ধবিমান থেকে স্কুল ও ছাত্রাবাসের ওপর অন্তত দুটি বোমা নিক্ষেপ করা হয়। হামলার সময় অধিকাংশ শিক্ষার্থী ঘুমিয়ে ছিল। বিস্ফোরণে স্কুলের ভবন ধসে পড়ে এবং বহু শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। হতাহতদের মধ্যে অধিকাংশই ১৭ থেকে ১৮ বছর বয়সী ছাত্রছাত্রী।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারে সহিংসতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। রাখাইনসহ বিভিন্ন অঞ্চলে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে জান্তার সংঘাত চলছে। এর ফলে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং লক্ষাধিক মানুষ দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছে।
ঘটনার পর শিশু অধিকার সংস্থা ইউনিসেফ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, রাতের বেলা স্কুলে হামলা চালিয়ে শিশুদের হত্যা ও আহত করা এক ভয়াবহ দৃষ্টান্ত। এতে বলা হয়, এ ধরনের হামলা রাখাইনের সহিংসতাকে আরও ভয়াবহ করে তুলছে এবং শিশু ও তাদের পরিবার চরম দুর্দশার মুখে পড়ছে। শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে ইউনিসেফ জানায়, স্কুল, ছাত্রাবাস ও ঘরবাড়িসহ শিশুদের ওপর নির্ভরশীল সব অবকাঠামোকে অবশ্যই নিরাপদ রাখতে হবে। সংঘাতের পক্ষগুলোকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে জান্তা সরকার চলতি বছরের ২৮ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছে। তবে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, সংঘাত ও বাস্তুচ্যুতির প্রেক্ষাপটে রাখাইনের সাম্প্রতিক স্কুল হামলা মিয়ানমারের চলমান সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে।