তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনি এরদোয়ান মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পকে চিঠি লিখে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় মানবিক সংকট মোকাবিলায় সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। চিঠিটি ২৩ আগস্ট ২০২৫ তারিখে তুরস্কের প্রেসিডেন্সি থেকে প্রকাশিত হয়।
চিঠিতে এমিনি এরদোয়ান মেলানিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়ে উল্লেখ করেছেন, ছয় বছর আগে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও মেলানিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের স্মৃতি তাঁর কাছে এখনও তাজা। তিনি মেলানিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে লেখা চিঠির বিষয়টিও তুলে ধরেছেন এবং সেই চিঠিতে প্রতিফলিত আবেগ ও মানবিক সহানুভূতি বিশ্বব্যাপী নজর কেড়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। বিশেষ করে, ইউক্রেনে অনাথ ও ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের জন্য মেলানিয়ার সহানুভূতি মানবিক দায়িত্বের প্রতি গভীর মনোযোগের প্রতিফলন।
এমিনি এরদোয়ান চিঠিতে লিখেছেন, “আপনি আপনার চিঠিতে উল্লেখ করেছেন- প্রতিটি শিশুরই ভালোবাসাপূর্ণ ও নিরাপদ পরিবেশে বড় হওয়ার অধিকার রয়েছে। এই অধিকার কোনও অঞ্চল, জাতি, ধর্ম বা মতাদর্শের একচেটিয়া নয়। যারা এই অধিকার থেকে বঞ্চিত, তাদের প্রতি সহায়তা করা মানব পরিবারের প্রতি একটি মৌলিক দায়িত্ব।” তিনি মেলানিয়ার মানবিক মনোভাবকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে আশা প্রকাশ করেছেন যে, গাজার শিশুদের প্রতি একইভাবে সহানুভূতি প্রদর্শিত হবে।
চিঠিতে এমিনি উল্লেখ করেছেন, গাজার বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। মাত্র দুই বছরের মধ্যে গাজায় ৬২,০০০ নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ১৮,০০০ শিশু রয়েছে। তিনি লিখেছেন, একজন মা, একজন নারী এবং একজন মানুষ হিসেবে মেলানিয়ার চিঠিতে প্রকাশিত সহানুভূতি হৃদয়ে আশার আলো জাগিয়ে দেয়। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস প্রকাশ করেছেন যে, মেলানিয়া ট্রাম্প গাজার শিশুদের জন্যও একইভাবে মানবিক সহায়তার প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখবেন, যারা শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য অপেক্ষা করছে।
এমিনি এরদোয়ান আরও বলেছেন, “বিশেষ করে একজন নেতার স্ত্রী হিসেবে, ইউক্রেনের যুদ্ধে নিহত, বাস্তুহারা পরিবার এবং অনাথ হয়ে পড়া শিশুদের প্রতি আপনার সহানুভূতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গাজার শিশুদের মুখে আবারও আনন্দের হাসি ফিরিয়ে আনার জন্য আপনার প্রচেষ্টা অত্যন্ত অর্থবহ।” তিনি চিঠির শেষ ভাগে যোগ করেছেন, বিশ্ব একটি সম্মিলিত জাগরণের অভিজ্ঞতা লাভ করছে এবং ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি একটি বৈশ্বিক ইচ্ছা হয়ে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে মেলানিয়ার সহানুভূতিশীল আহ্বান গাজার শিশুদের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে এবং একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনের সুযোগ তৈরি করবে।
তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনি এরদোয়ান মেলানিয়া ট্রাম্পকে চিঠি লিখে মানবিক সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সচেতনতা ও সক্রিয় সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন। গাজার শিশুরা শান্তি, নিরাপত্তা এবং শিক্ষার অধিকার ফিরে পেতে হলে বিশ্বজুড়ে মানবিক সমর্থন জরুরি, এই বার্তাই তাঁর চিঠিতে প্রতিফলিত হয়েছে।