গাজীপুরের জয়দেবপুরে ২০১৬ সালে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে সাত যুবককে হত্যার ঘটনায় সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। সোমবার (১৮ আগস্ট) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই আদেশ দেন। প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, মিজানুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তা। জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৮ অক্টোবর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ইসলামী মনোভাবাপন্ন কয়েকজন যুবক ও কিশোরকে আটক করা হয়। তারা মূলত মাদরাসার ছাত্র বা ইসলামী মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। এই সাতজনের মধ্যে একজন ছিলেন যাত্রাবাড়ীর একটি মাদরাসার ছাত্র ইবরাহীম, যিনি তখন ১৯ বছর বয়সী।
সোমবারের শুনানীতে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম বলেন, ওই দিন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি) ও পুলিশের সহযোগিতায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পাতারটেক এলাকার একটি দোতলা বাড়িতে অভিযান চালায়। বাইরে তালা ঝুলিয়ে সেই জায়গাকে জঙ্গি আস্তানা হিসেবে প্রচার করা হয়। একপর্যায়ে সরাসরি গুলি চালিয়ে সাতজনকে হত্যা করা হয়। নিহতদের রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার দাবি হত্যা ঘটানোর পর প্রচার করা হলেও তদন্তে দেখা গেছে, তাদের কারও সঙ্গে কোনো জঙ্গি সম্পৃক্ততা ছিল না।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, মামলাটিতে প্রাথমিকভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর ধারাবাহিকতায় সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা আবেদন করা হয়। এছাড়া অন্যান্য আসামির মধ্যে ছিলেন গাজীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ, সিটিটিসি’র সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম, বগুড়ার তৎকালীন এসপি ও এএসপি।
উল্লেখ্য, জাবেদ পাটোয়ারীকে কেন্দ্র করে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বই সংক্রান্ত ফ্ল্যাট ও অর্থ গ্রহণের অভিযোগের বিষয়ে দুদক বর্তমানে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করেছে।