জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের (এমওএনইউএসসিও) অধীনে কঙ্গোর রাজধানী কিনশাসায় দায়িত্ব পালনরত বাংলাদেশ পুলিশের নারী কন্টিনজেন্ট বিএএনএফপিইউ-১ (BANFPEU-1) এর সদস্যরা তাদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা পদকে ভূষিত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয় এ পদক।
জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি বিন্টু কেইতা প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যদের পেশাদারিত্ব, দায়িত্ববোধ ও শৃঙ্খলা ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিশেষ করে নারী শান্তিরক্ষীদের অনবদ্য অবদানের জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণকে জাতিসংঘের ‘জেন্ডার ইকুয়ালিটি’ ও ‘উইমেন্স এমপাওয়ারমেন্ট’ ম্যান্ডেট বাস্তবায়নের এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনুষ্ঠানে বিএএনএফপিইউ-১ এর কন্টিনজেন্ট কমান্ডার পুলিশ সুপার কাজী রুবাইয়াত রুমী সভাপতিত্ব করেন। এছাড়া এমওএনইউএসসিও পুলিশ কম্পোনেন্টের প্রধান ও ভারপ্রাপ্ত কমিশনার জেনারেল আলাইন বামেনোও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বিএএনএফপিইউ-১, রোটেশন-১৭ এর অধীনে মোট ১৭৮ জন শান্তিরক্ষী দায়িত্ব পালন করছেন, যার মধ্যে ৬৮ জন নারী সদস্য এ পদকে সম্মানিত হন। অনুষ্ঠানটিতে এমওএনইউএসসিও কিনশাসার বিভিন্ন সেকশনে কর্মরত ২৩ জন ইন্ডিভিজুয়াল পুলিশ অফিসার্স (আইপিও) কে বিএএনএফপিইউ-১ এর সঙ্গে যৌথভাবে শান্তিরক্ষা পদক প্রদান করা হয়।
জেনারেল আলাইন বামেনোও তার বক্তব্যে বিএএনএফপিইউ-১ এর অপারেশনাল দক্ষতা, জনসম্পৃক্ততা এবং স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে সমন্বিত কার্যক্রম বিশেষভাবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট, জয়েন্ট পেট্রোল এবং ক্যাপাসিটি বিল্ডিং বিষয়ক প্রশিক্ষণের সফল বাস্তবায়ন কন্টিনজেন্টের শক্তিশালী ভূমিকার প্রমাণ।
অনুষ্ঠানে প্যারেড মার্শালের দায়িত্ব পালন করেন অপারেশনস অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস কুমার পাল এবং প্যারেড কমান্ডার ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাসরিন আক্তার। আইপিও সদস্যবৃন্দ এবং এমওএনইউএসসিওর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সদর দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কন্টিনজেন্টটি গত বছরের ২৭ মে থেকে অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করে আসছে, যা বাংলাদেশ পুলিশের জন্য গর্বের বিষয়।
বাংলাদেশ পুলিশের নারী সদস্যদের এই সম্মান দেশ ও জাতির জন্য এক অনন্য গর্বের মুহূর্ত। জাতিসংঘের মহাসংস্থা থেকে প্রাপ্ত এই স্বীকৃতি তাদের পেশাদারিত্ব ও আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে গণ্য হয়।