কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ননদ-ভাবি সম্পর্কের দুই নারী দীর্ঘদিন ধরে সমকামী প্রেমে আবদ্ধ থেকে বিয়ের দাবিতে অনশন করেছেন। গত ৯ আগস্ট শনিবার রাতে তারা এই দাবি নিয়ে অনশন শুরু করলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন।
রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের দক্ষিণ খনজনমারা গ্রামের ময়নাল হকের মেয়ে রুনা লায়লা এবং চর শৌলমারী গ্রামের লস্করের মেয়ে দীর্ঘদিন ধরে একে অপরের প্রতি গভীর ভালোবাসা পোষণ করছিলেন। ননদ-ভাবির সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে সমকামী সম্পর্ক, যা স্থানীয় সমাজে নতুন এক বিতর্কিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
তারা পারিবারিক বাধা অতিক্রম করে বিয়ের দাবি জানাতে শুরু করেন এবং অবশেষে অনশন কর্মসূচি গ্রহণ করেন। অনশন চলাকালে তারা সামাজিক স্বীকৃতি ও নিরাপত্তার দাবিতে দৃঢ় অবস্থান নেন। অনশনের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত হস্তক্ষেপ করেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে তাদের উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। কেউ তাদের মানবিক অধিকার ও ভালোবাসার স্বাধীনতা রক্ষার পক্ষে কথা বলছেন, আবার কেউ সমাজ ও ঐতিহ্যের পরিপন্থী বলে অভিযোগ করছেন।
স্থানীয় প্রশাসন বলেছে, আইনের আওতায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে সামাজিক শান্তি বজায় থাকে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়। বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে, যাতে পরিস্থিতি অবনতির মুখে না পড়ে।
রৌমারী থানার কর্মকর্তারা জানান, ঘটনাস্থল থেকে দুই নারীকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা হয়েছে। বর্তমানে বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে এবং সামাজিক বিক্ষোভ বা বিশৃঙ্খলা এড়াতে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
স্থানীয় মানুষদের বক্তব্য, এ ধরনের ঘটনা সমাজে বিরল ও অস্বাভাবিক হলেও মানবাধিকার ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। তবে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সমস্যার সমাধান খোঁজা জরুরি।