ইরানের সঙ্গে পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্যের বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতের ছয়টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার (৩০ জুলাই) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক ঘোষণায় এ তথ্য জানানো হয়।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর যুক্তরাষ্ট্রে এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন যেকোনো স্থানে সম্পদ ও স্বার্থ ‘ব্লক’ বা জব্দ থাকবে। এই পদক্ষেপ মার্কিন নির্বাহী আদেশ ১৩৮৪৬ অনুযায়ী গ্রহণ করা হয়েছে, যা ইরানের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের একটি অংশ।
যেসব ভারতীয় কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো—
ভারতের যে ছ’টি প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, তারা হলো – অ্যালকেমিক্যাল সলিউশনস প্রাইভেট লিমিটেড, গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যালস লিমিটেড, জুপিটার ডাই কেম প্রাইভেট লিমিটেড, রমনিকলাল এস গোসালিয়া অ্যান্ড কোম্পানি, পারসিস্টেন্ট পেট্রোকেম প্রাইভেট লিমিটেড এবং কাঞ্চন পলিমার।
Alchemical Solutions Pvt Ltd – ২০২৪ সালে ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল আমদানি করে প্রায় ৮৪ মিলিয়ন ডলার মূল্য–ক্রয়
Global Industrial Chemicals Ltd – জুলাই ২০২৪–জানুয়ারি ২০২৫ সময়কালে ৫১ মিলিয়ন ডলারের methanol সহ ইরানি পণ্য ক্রয়
Jupiter Dye Chem Pvt Ltd – ইরানি পণ্য, বিশেষ করে toluene, ক্রয়ে ৪৯ মিলিয়ন ডলারের অর্ডার
Ramniklal S Gosalia & Co – methanol ও toluene মিলিয়ে প্রায় ২২ মিলিয়ন ডলারের লেনদেন
Persistent Petrochem Pvt Ltd – অক্টোবর–ডিসেম্বর ২০২৪-এ ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল আমদানি করে ১৪ মিলিয়ন ডলারের লেনদেন
Kanchan Polymers – UAE-ভিত্তিক Tanais Trading থেকে ১.৩ মিলিয়ন ডলারের polyethylene আমদানি করেছে
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়, এসব প্রতিষ্ঠান ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল পণ্যের আমদানি ও বাণিজ্যে জড়িত ছিল, যার মাধ্যমে ইরান সরকার অর্থ আয় করছে। এই অর্থ ব্যবহার করে ইরান মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন, সংঘাত উসকে দেওয়া এবং নিজ দেশের জনগণের দমন-পীড়নে জড়িত বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
এই ছয় ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ছাড়াও একই দিন বিশ্বজুড়ে আরও ১৪টি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যাদের সবাই ইরানি তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বলে জানানো হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত ট্রাম্প প্রশাসনের ‘ম্যাক্সিমাম প্রেসার’ নীতির ধারাবাহিকতা, যার মাধ্যমে ইরানের অর্থনৈতিক সক্ষমতা হ্রাস করে তাদের পরমাণু কর্মসূচি ও আঞ্চলিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে চায় ওয়াশিংটন।