রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের চাঞ্চল্যকর ঘটনা। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এবং শিক্ষাবিদ ড. এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান সম্প্রতি নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি ভিডিও পোস্ট করে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। রোববার (১৩ জুলাই) বিকেলে পোস্ট করা ওই ভিডিওতে দেখা যায়, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য ইমামুর রশিদ ইমন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এক নারীর কাছ থেকে ৭ লক্ষ টাকা গ্রহণ করছেন। ভিডিওটি প্রকাশের পর মুহূর্তেই তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভাইরাল ভিডিওটি দেখতে সাবাস বাংলাদেশ এর ফেসবুক পেইজটি ভিজিট করুন। অথবা এ লেখার লিংকে ক্লিক করুন।
ভিডিওর সঙ্গে দেওয়া বিবরণে ড. ওয়াহিদুজ্জামান দাবি করেন, এই ভিডিওটি ২০২৫ সালের ১৪ মে রাত ৯টা ২১ মিনিটে ধারণ করা হয়েছে। তিনি লেখেন, একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা নারী এনসিপির বিভিন্ন প্রজেক্টের আশ্বাসে ইতোমধ্যেই প্রায় ৪৮ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। তবে কোনো কাজ কিংবা প্রতিশ্রুত সেবা কিছুই পাননি। ভিডিওতে স্পষ্ট শোনা যায়, ওই নারী বলছেন, “ভাইয়ের সাথে ১০ লক্ষ ঠিক হয়েছিল, আমি ৭ লক্ষ নিয়ে এসেছি।”
এ ঘটনা নিয়ে এনসিপি নেতা ইমামুর রশিদ নিজের ফেসবুকে একটি দীর্ঘ ব্যাখ্যা পোস্ট করেন। তিনি জানান, মে মাসের শুরুর দিকে ওই নারী নিজে থেকেই পার্টির অস্থায়ী কার্যালয়ে আসেন এবং পার্টির আহ্বায়কসহ অন্য নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে তিনি স্বেচ্ছায় পার্টি ফান্ডে অনুদান দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এরপর পরবর্তী সময়ে তিনিই অনুরোধ করেন ১০ লক্ষ টাকা ডোনেশন দিতে, এবং পার্টির পক্ষ থেকে ইমামুর রশিদকে সেই অর্থ গ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
ইমামুর রশিদের দাবি, ওই নারী একাধিকবার পার্টি অফিসে এসেছেন এবং আগে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এও অনুদান দিয়েছেন বলে জানান। এনসিপি নেতা আরও বলেন, ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, মূলত পার্টির শীর্ষ নেতাদের কাছে ব্যক্তিগত সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন ওই নারী। যখন তা সম্ভব হয়নি, তখন উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভিডিওটি প্রকাশ করেছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, “পার্টির পক্ষ থেকে কখনো কোনো ডোনেশনের বিনিময়ে প্রজেক্টের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি। ৪৮ লক্ষ টাকার কথাও মিথ্যা। কেউ ইচ্ছা করলে যে কোনো রাজনৈতিক দলকে অনুদান দিতে পারে। এটাই নিয়ম। আর আমি যে দায়িত্ব পালন করেছি সেটি পার্টির ফান্ড কালেকশন প্রসেসের অংশ। আমার সততার প্রশ্ন তুললে যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারে আমি অনৈতিক কাজ করেছি, তাহলে স্বেচ্ছায় যে কোনো শাস্তি মাথা পেতে নেব।”
এ ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ভিডিও ভাইরালের পর এনসিপি তাদের ফান্ড কালেকশন প্রক্রিয়া ও নীতিমালা নিয়ে নতুন ওয়েবসাইট চালুর ঘোষণা দিয়েছে। রাজনৈতিক মহলে এই ঘটনার রেশ কতদূর যায় সেটিই এখন দেখার বিষয়।