সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:

সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫
  • ১৫ বার দেখা হয়েছে

রাজধানী ঢাকায় উত্তেজনা আর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন দেশের তিন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে দায়ের করা মামলার পর একে একে গ্রেপ্তার হচ্ছেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করেছে।

ডিএমপি’র যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড গোয়েন্দা-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “ডিবি পুলিশের একটি দল মগবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে আজ দুপুর ২টার দিকে কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করেছে।”

এর আগে গত ২২ জুন (শনিবার) সকালেই শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপি পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন খান মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। একইসঙ্গে আসামি করা হয়েছে দেশের তিন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ, কে এম নুরুল হুদা এবং কাজী হাবিবুল আউয়ালকে। মোট আসামি করা হয়েছে ২৪ জনকে।

এই মামলায় ২২ জুন সন্ধ্যায় উত্তরা এলাকা থেকে সাবেক সিইসি কে এম নুরুল হুদাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে চার দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। একই মামলায় কাজী হাবিবুল আউয়ালকেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। ওই কমিশনে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, বেগম রাশিদা সুলতানা এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান।

অন্যদিকে কে এম নুরুল হুদা ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সিইসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার নেতৃত্বাধীন কমিশনের অধীনে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলে।

এর আগের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন (২০১৪) অনুষ্ঠিত হয় কাজী রকিব উদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে। তিন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সরকারদলীয় প্রভাব ও কারচুপির মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে, যা দেশে একের পর এক বিতর্কিত নির্বাচনের নজির তৈরি করেছে।

ডিবি পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “এই মামলার তদন্তে আরও কয়েকজন আসামির গ্রেপ্তারের প্রস্তুতি রয়েছে। প্রয়োজনে সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানও হবে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

এই মামলায় প্রধান আসামি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকলেও, সংবিধান অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে বিশেষ প্রক্রিয়া ও অনুমতির প্রয়োজন। মামলাটি এখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিএনপি বলছে, ‘দেশে গণতন্ত্র ধ্বংস ও ভোটাধিকার হরণে এ কমিশনগুলোর ভূমিকা ছিল ঘৃণ্য। দোষীদের বিচার না হলে ভবিষ্যতে নির্বাচন ব্যবস্থা আরও ভেঙে পড়বে।’

এদিকে আওয়ামী লীগের নেতারা এই মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ও ‘অযৌক্তিক’ বলে দাবি করছেন।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT