বাংলাদেশের সরকারি খাতের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থায়ন অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। ‘স্ট্রেংদেনিং ইনস্টিটিউশনস ফর ট্রান্সপারেন্সি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিবিলিটি’ (এসআইটিএ) নামে এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থাগুলোকে আধুনিক করে গড়ে তোলা হবে। এতে করে সরকারি কার্যক্রম আরও স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক এবং জনবান্ধব হবে।
বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদিত এই প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পরিকল্পনা বিভাগ, বাংলাদেশ সরকারি ক্রয় কর্তৃপক্ষ (সিপিপিই) এবং মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় (সিএজি)-এর দক্ষতা ও শাসন কাঠামো আরও শক্তিশালী করা হবে।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, ‘‘সরকারি ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজড করার মাধ্যমে এই বিনিয়োগ স্বচ্ছতা বাড়াবে, দুর্নীতি কমাবে এবং মানুষের কাছে সরকারি সেবা আরও সহজে পৌঁছে যাবে। এতে জনগণের মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা আরও দৃঢ় হবে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘সরকারি সেবার গুণগত মান এবং প্রবেশগম্যতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এই প্রকল্প উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। আধুনিক সরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ উদীয়মান অর্থনীতির নতুন চাহিদা পূরণে আরও সক্ষম হয়ে উঠবে।’’
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, এই প্রকল্পের পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে আরও একটি উন্নয়ন নীতিগত ঋণ নিয়ে আলোচনা চলছে। চলতি মাসের শেষের দিকে এ নিয়ে বোর্ড আলোচনায় বসবে। এই ঋণের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়, ব্যাংক খাতের সংস্কার, সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা, তথ্য সংরক্ষণ ও বিতরণ, সামাজিক সেবা প্রদান এবং নিরীক্ষা ও জবাবদিহিতার স্বচ্ছতা বৃদ্ধির জন্য সরকারকে সহায়তা করা হবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং প্রকল্পের টিম লিডার সুলেমানে কুলিবালি বলেন, ‘‘পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থাকে নিয়ে একটি সমন্বিত কৌশলে কাজ করার ফলে সরকারের কার্যকারিতা অনেক বেড়ে যাবে। এটি দেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘এই প্রকল্প এবং প্রস্তাবিত উন্নয়ন ঋণ একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে। এতে আধুনিক আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং সরকারি কার্যক্রমের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরি হবে।’’
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে বিশ্বব্যাংক। এ পর্যন্ত সংস্থাটি বাংলাদেশে ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি অনুদান, সুদমুক্ত ও স্বল্পসুদের ঋণ প্রদান করেছে।
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় ভবিষ্যতেও পাশে থাকার অঙ্গীকার অব্যাহত থাকবে