বাংলাদেশের সাহসী লড়াই, শেষ পর্যন্ত হতাশার হার - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
ইসরাইলি হামলায় ইরানের বিমানবাহিনী প্রধান নিহত: হামাসের নিন্দা ও বিশ্বকে ঐক্যের আহ্বান রাবির নীল-সাদা বাসের জগৎ যেন প্রেমময় কবিতা তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক : বিএনপির ভবিষ্যৎ কৌশলে সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট ফিলিস্তিনের পক্ষে সরব হওয়াতে পিয়ের্স মরগ্যানকে হুমকি রাজবাড়ীর পাংশায় ইয়াবা ব্যবসায়ী বরকত সরদার আটক নির্বাচনের পর দায়িত্বে থাকার আগ্রহ নেই, অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটের আশা-ড. ইউনূস স্বাধীনতাপূর্ব বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ঝিনাইদহে কৃষি শিক্ষার্থীদের ঈদ উপলক্ষ্যে মিলনমেলা ও নবীনবরণ অনুষ্ঠিত মোটরসাইকেল চুরির গোপন কারবার, পুলিশের জালে মেকানিক নিখোঁজ ব্যক্তির মৃত্যু নিয়ে রহস্য: নদীতে ভাসছে লাশ

বাংলাদেশের সাহসী লড়াই, শেষ পর্যন্ত হতাশার হার

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
  • ১৭ বার দেখা হয়েছে
AFC BD-Singapore

বাংলাদেশের ফুটবলে আজও সেই জ্বলন্ত সংগ্রামের ছবি — প্রতিটি পাস, প্রতিটি ড্রিবল, প্রতিটি ফাঁকা গোলরক্ষীর মুখোমুখি মুহূর্ত পর্যন্ত ফুটে উঠেছিল সাহস আর আবেগের মূর্ত রূপ। তবে গোল না পাওয়া আর ভাগ্যবশত কিছু হতাশাজনক সিদ্ধান্তের ফলে শেষ হাসি রহে–বে শুধু স্মৃতি।

স্টেডিয়ামে ভিড়ের গর্জন যেন কানে বাজছিল “গোল দরকার, এই ম্যাচ জয় দরকার।” সে প্রত্যাশা নিয়ে শুরু হয় লাল-সবুজের আক্রমণ। প্রথমার্ধেই দেখা যায়, শাকিল আহাদ তপুর সূক্ষ্ম পাসে রাকিব হোসেন গোল করতে পারলে এনিফলেই মেজাজ পালটে যেত খেলার, হয়তো স্কোরবোর্ডে—সিঙ্গাপুর ০–বাংলাদেশ ১।

সংক্ষেপে ম্যাচের মূল মুহূর্ত:

  • ⚽ ৪৫’ — সিঙ্গাপুরের সং উই ইয়াংয়ের গোল

  • ⚽ ৫৮’ — ইকশান ফান্ডির গোল, ২-০

  • ⚽ ৬৭’ — রাকিব হোসেনের গোল, ২-১

  • 🎯 একাধিক সুযোগ নষ্ট বাংলাদেশ

  • 📢 রেফারির কয়েকটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত

  • 📅 পরের ম্যাচ ৯ অক্টোবর, হংকংয়ের বিপক্ষে

তবুও সেই সুযোগ কাজে লাগেনি—রাকিবের দুর্বল শট হয় গোলরক্ষকের জালে ঢেউ তুলার পর্যায়ে না দাঁড়িয়েই বাতাসে ভাসে। এর আগেই ফাহমিদুল-শমিত এর এক্সপ্রেসিভ মুভমেন্ট, বল কন্ট্রোল আর আক্রমণ গড়ার পান্ডিত্যতার দৃশ্য দেখিয়েছে, যা দর্শকদের মন ছুঁয়ে দেয়।

৩৯ মিনিটে ফ্রি কিকে হামজা শট নিয়ে পোস্টের উপর দিয়ে বাউন্স করার মুহূর্তে, যেন উচ্ছ্বাস আর হতাশার মাঝে সূক্ষ্ম সেতু টেনে দিয়েছিল রেফারি—নো সিগন্যাল, আর গোল না।

আর শেষ মিনিটে কর্নার থেকে তপু বর্মণের হেড, পোস্টের ঠিক পাশ দিয়ে নিঃশব্দে উড়ে যেতে দেখে মনে হলো—একটি হাওয়ার দোলই আজকের ম্যাচের ফল লিখে দেবে।

তবুও ৪৫–এর যোগ সময়ে সিঙ্গাপুর ভাঙে বাংলাদেশের ডিফেন্স। গোলরক্ষক মিতুল মারমার ফিস্ট হওয়া বল শেষে ডান দিকে গিয়ে পৌঁছায় এবং সং উই ইয়াং বিনা বাধায় শটে গোল করেন—০–১। গ্যালারির উচ্ছ্বাস বদলে যায় মৃদু নীরবতায়।

দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে আসে নতুন প্রত্যাশা, সমতা ফেরানোর স্বপ্ন। ডানপাশে চলমান আক্রমণে শাহরিয়ার ইমন শেষ মুহূর্তে শেষ বলে না নাগাল নিলেও, সুযোগ তৈরি করেছে। তবে ৫৬ মিনিটে ইকশান ফান্ডির গোল—০–২। বিপক্ষের রক্ষণ ব্যবস্থা যেমন চমৎকার, তেমন মিতুলের অসাধারণ সেভ ছিল লাখটা প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু ফাঁকা বলের তার ছোঁয়া সিঙ্গাপুরের জালে ওড়াল।

৬৭ মিনিটে সম্পূর্ণ অন্য দৃশ্য। মাঝমাঠে হামজা–রাকিব–শমিতের ভালো সংগঠন, চাকা খেলায় অংশ, আর ফাঁক অবস্থান তৈরি করেই আক্রমণ—হামজার পাস ঘেরা হয়ে যায় রাকিবের। এই এক শটের মধ্যে বার বার গ্যালারি গুঞ্জন করে ওঠে—গোল! গোল! সিঙ্গাপুর গোলরক্ষকের হাত ওড়ায় বল, জালে চলে যায় ঢেউ। স্কোর হয়ে দাঁড়ায় ১–২। হার না মানার ঢেউয়ে সাময়িক ভাবে জীবন্ত হয়ে ওঠে স্টেডিয়াম।

এরপর ৮০ মিনিটের পর থেকে জায়গায় জায়গায় কর্নার, তীব্র আক্রমণ—তবে বল নেয় শক্তির চেয়েও স্বাধীনতা দরকার ছিল। শেষ দিকে তারিক কাজীর হেড—কাঁপানো পোস্টের ঠিক পাশেই। আর, ৯৬ মিনিটে হামজার ডানপ্রান্ত থেকে নেওয়া হেড—বল ফিরে এসেছে পোস্টের বাইরে, জোরেখোদেই যেন বল বলে দিল, “দেখেছো, কত ভালো খেলছে বাংলাদেশ।” তবে ফুটবল মাঠে জবাব জেতােই নয়, মাঝে মাঝে হার দিয়েই ওঠে সেরা শক্তির প্রমাণ।

শেষের ঠাসা সময়ে ফাইনাল ফাউল: ফায়সাল ফাহিম দুই ফিল্ডারের বিপরীতে অসুস্থতা ছিল, অন্তত পেনাল্টি দাবি জোরালো আর দৃঢ়। কিন্তু রেফারি কর্নার দেয়, বাতিল করে বেঁচে যাওয়া শেষ সুযোগ।

১৮০ মিনিটে ১ পয়েন্ট নিয়ে পিছিয়ে থাকা লাল-সবুজের দল। কিন্তু হৃদয়ে ফুটেছে যেমন লড়াকু দল। পরবর্তী লক্ষ্য এখন – ৯ অক্টোবর হংকংয়ের মাঠে পক্ষে ফিরিয়ে দেওয়া সেই আত্মবিশ্বাসের খেলা, যে ফুটবল আমাদের উল্লাস আর গর্বের উৎস হয়।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT