যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থানকারী ৩৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে বিশেষ সামরিক বিমানে করে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। শনিবার (২ আগস্ট) ভোর ৬টা ৪৫ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক কার্গো বিমান ‘সি-১৭’ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ফেরত পাঠানোদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছেন।
মার্কিন অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ অধিদপ্তর (ICE) জানায়, এসব বাংলাদেশি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণ করেনি। এরপর যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
তবে ফেরত আসা বেশ কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করেছেন, পুরো যাত্রাপথে তাদের হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয়েছিল। এটি তাদের জন্য অত্যন্ত অপমানজনক ও মানসিকভাবে কষ্টদায়ক ছিল বলে জানান তারা। একজন যাত্রী বলেন, “কোনো অপরাধ না করেও আমাদের অপরাধীর মতো পরিবহন করা হয়েছে।”
বিমানবন্দরে অবতরণের পর তাদের স্বাগত জানায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক। এ সময় তাদের তাৎক্ষণিক খাবার, পানীয় ও বাড়ি পৌঁছানোর জন্য প্রাথমিক পরিবহন সহায়তা প্রদান করে ব্র্যাকসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, এ ধরনের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় যেন কোনোভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের নাগরিকদের মর্যাদা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণভাবে কাজ করছি।”
এদিকে অভিবাসন বিশ্লেষক ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ ঘটনাকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির কঠোরতা এবং ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ার মানবিক দিকগুলো নিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বর্তমানে দেশে ফেরত আসা এসব নাগরিকের মানসিক পুনর্বাসন ও ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা চলছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের পুনর্বাসনে প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।