
ছাত্ররা কেন ৫ অগাস্টকে বিপ্লবে বা আমূল পরিবর্তনের সূচনাবিন্দুতে পরিণত করতে পারে নাই?
– কারণ তারা এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয় নাই। তারা কোটা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল, স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনের নয়। স্বৈরাচার পতন হয়েছে ইনসিডেন্টালি, পরিকল্পনা ছাড়া। জনগণের লেজিটিমেট, ইন্টেন্স গ্রিভেন্স হঠাৎ করে গণঅভ্যুত্থানে রুপ নিয়েছে, কোনো মাস্টারমাইন্ডের ব্রেইনচাইল্ড এই আন্দোলন ছিল না।
– ছাত্রদের কোনো ম্যানিফেস্টো ছিল না। ইনফ্যাক্ট তাদের কোনো ধারণাই ছিল না এই আন্দোলন কোনদিকে গড়াবে। তাদের চাওয়া ছিল স্রেফ কোটার অবসান। তারা যদি বলে তাদেরও চাওয়া ছিল স্বৈরাচারের পতন তবে সেই চাওয়া সবারই ছিল। তারা যদি বলে এটা পরিকল্পিত তবে বাস্তবতা সে দাবির বিপক্ষে রায় দেয় — এটা ছিল আকস্মিক গণঅভ্যুত্থান।
– ছাত্ররা সত্যিকার অর্থে বিদ্যমান ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন চায় নি। কখনও কি তারা সেটা বলেছে? তারা নিজেদের অধিকার চেয়েছে, হয়তো কিছু সংস্কার চেয়েছে — এবং সেটা হাসিনার পতনের মাধ্যমে। বিএনপি সহ অন্য দলগুলো চায় এই সিস্টেম টিকেই থাকুক, তারাই হবে জমিদার। এমনকি জনগণও চায় নি কারণ জনগণ এত কিছু বোঝে না, বা কেউ তাদের বুঝিয়ে সমর্থনও আদায় করে নাই। জুলুমের অবসান চেয়েছে তার মানে এই নয় একেবারে বিপ্লব চেয়েছে। সত্যি বলতে সত্যিকার অর্থে বিপ্লব বা রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন চায় খুবই ক্ষুদ্র একটা ইসলামপন্থী গোষ্ঠী যাদের জনসমর্থন যথেষ্ট নেই।
– বিপ্লবতাড়িত না হলেও অনেক পরিবর্তন করার স্টেইক ও সুযোগ ছাত্রদের ছিল, কিন্তু সেটা করে নাই। এর কারণ তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক স্থূলতা — তারা আওয়ামীলীগকে ফ্যাশিস্ট মনে করে, মুজিববাদকে শেষ করতে চায় — কিন্তু সেটা করতে চায় প্রথম আলোর কোলে বসে — যেটা একটা অক্সিমরন। ফ্যাশিস্ট এনাবলারদের কোলে বসে ফ্যাশিবাদকে নির্মূল করা যায় না।
এতকিছুর পরেও আমি চেয়েছি এই ছাত্ররা থাকুক, তাদের প্রভাব থাকুক, তাদের চাপে হলেও এই সরকার কিছু সংস্কার করুক। তরুণ অথবা নতুনদের নষ্ট হতে, দূর্নীতি করতে কিংবা ফ্যাশিবাদের শিল্পে পারদর্শী হতে কিছু সময় লাগে। সে সময়ে যদি ভালো কিছু হয়, বা খারাপকে ঠেকিয়ে রাখা যায় তাও ভালো।
কিন্তু এরা হতাশ করেছে কেবল।
জানিনা এখনও সময় আছে কিনা।
- দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর সর্বশেষ নিউজ পড়তে ক্লিক করুন: সর্বশেষ
- দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর ফেসবুক পেজটি ফলো করুন: dailysabasbd
Leave a Reply