বাংলাদেশের সংবিধানে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। প্রস্তাবে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ এবং ‘প্রজাতন্ত্র’ শব্দের পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে কমিশন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন জমা দেয়। একই দিনে নির্বাচন ব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন ও পুলিশ সংস্কার কমিশনও তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
প্রস্তাবিত সংশোধন অনুসারে, সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবনায় উল্লেখ থাকবে, “জনগণের সম্মতিক্রমে আমরা এই সংবিধানকে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান’ হিসেবে গ্রহণ করছি।” বর্তমান সংবিধানে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে।
কমিশনের প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, সংবিধানের সব প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ‘প্রজাতন্ত্র’ এবং ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ শব্দের পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ ও ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ ব্যবহৃত হবে। তবে ইংরেজি সংস্করণে ‘রিপাবলিক’ ও ‘পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ’ অপরিবর্তিত থাকবে।
এছাড়াও, নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে ‘বাঙালি’ শব্দের পরিবর্তে ‘বাংলাদেশি’ ব্যবহারের সুপারিশ করেছে কমিশন। তারা প্রস্তাব করেছে, সংবিধানের বর্তমান অনুচ্ছেদ ৬(২) সংশোধন করে ‘বাংলাদেশের নাগরিকগণ “বাংলাদেশি” বলে পরিচিত হবেন’ যুক্ত করা হোক। ‘বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি…’ বিধানটি বিলুপ্ত করারও সুপারিশ করা হয়েছে।
কমিশনের এই সুপারিশে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সাংবিধানিক এবং সামাজিক কাঠামোতে পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
বিশেষত, ‘বাঙালি’ শব্দের পরিবর্তে ‘বাংলাদেশি’ ব্যবহার করার প্রস্তাব দেশের জাতিগত পরিচয়ের পরিবর্তনের একটি বড় পদক্ষেপ হতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই প্রস্তাবগুলো দেশের সংস্কৃতি ও জাতীয় পরিচয়ের নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে।
Leave a Reply