টিউলিপ সিদ্দিক ফ্ল্যাট বিতর্ক : ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
সাকিব ঝড়ে প্রথম জয়ের আনন্দ মায়ামি ব্লেজের ইউরোপীয় তিন দেশকে হুমকি-চাপের পুরনো কৌশল ত্যাগের আহ্বান ইরানের এসএসসিতে ১২৩০ নম্বর পেয়ে তাক লাগিয়েছে নাগেশ্বরীর তুশিন পর্যায়ক্রমে সেনা প্রত্যাহারে একমত হামাস–ইসরায়েল প্রবল প্রতিবাদের মুখেও শেষপর্যন্ত ঢাকায় চালু হলো জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন অফিস চট্টগ্রাম সমিতি, ঢাকা আয়োজিত জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ‘তুমি কে আমি কে, জঙ্গী জঙ্গী; কে বলেছে কে বলেছে, স্বৈরাচারের সঙ্গী’ স্লোগানে প্রকম্পিত বাইতুল মোকাররম জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রতীকী ম্যারাথনে যুব উপদেষ্টার অঙ্গীকার বার্সেলোনায় ‘সবার জন্য কাগজ চাই’ দাবিতে অনিয়মিত অভিবাসীদের বর্ণবাদবিরোধী প্রতিবাদ পিনাকীর আবেগঘন বার্তা – হাটহাজারীর ছাত্ররাই বিপ্লবের রক্ষক

টিউলিপ সিদ্দিক ফ্ল্যাট বিতর্ক : ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় শনিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১৬৭ বার দেখা হয়েছে
Tulip Flat in King Corss

টিউলিপ সিদ্দিক ফ্ল্যাট বিতর্ক নিয়ে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস অনুসন্ধানী প্রতিবেদন  প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনার ভাগ্নি, লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকায় অবস্থিত একটি ফ্ল্যাট বিনামূল্যে পাওয়ার ঘটনায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ২০০৪ সালে আবাসন ব্যবসায়ী আবদুল মোতালিফ তাকে এই ফ্ল্যাটটি উপহার দেন। বিষয়টি এখনো আলোচনার শীর্ষে রয়েছে এবং এটি টিউলিপের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

ফ্ল্যাট হস্তান্তরের বিবরণ

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০১ সালে আবদুল মোতালিফ ১ লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ড (বর্তমান বাজারমূল্যে প্রায় ২ কোটি ৯৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা) মূল্যে কিংস ক্রসের নিকটবর্তী এই ফ্ল্যাটটি ক্রয় করেন। ২০০৪ সালে ফ্ল্যাটটি বিনামূল্যে টিউলিপ সিদ্দিকের নামে হস্তান্তর করা হয়। যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধন সংক্রান্ত নথি অনুসারে, ফ্ল্যাটটি বর্তমানে তার মালিকানায় রয়েছে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, একই ভবনের আরেকটি ফ্ল্যাট ২০২৩ সালের আগস্টে ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে (প্রায় ৯ কোটি ৭৯ লাখ ৯১ হাজার টাকা) বিক্রি হয়েছে।

টিউলিপ সিদ্দিকের সংসদ সদস্য হিসেবে জমা দেওয়া আর্থিক বিবরণীতে উল্লেখ আছে যে, তিনি দুটি ফ্ল্যাট থেকে ভাড়া আয় করেন। তবে, ফ্ল্যাটটি কীভাবে এবং কেন তার হাতে এসেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

পটভূমি ও কৃতজ্ঞতার প্রসঙ্গ

বিষয়টি সম্পর্কে অবগত একটি সূত্র ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে জানিয়েছে যে, টিউলিপের মা-বাবা এক সময় আবদুল মোতালিফকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছিলেন। সেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশের নিদর্শন হিসেবে তিনি ফ্ল্যাটটি উপহার দেন। বর্তমানে ৭০ বছর বয়সী মোতালিফ দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনে বসবাস করেন। ভোটার নিবন্ধন সংক্রান্ত নথি থেকে জানা গেছে, ওই এলাকায় মোতালিফের ঠিকানায় মজিবুল ইসলাম নামে আরেক ব্যক্তি বসবাস করেন, যার বাবা ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।

অভিযোগ ও টিউলিপ সিদ্দিক ফ্ল্যাট বিতর্কবিতর্ক

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, টিউলিপ সিদ্দিকের এই ফ্ল্যাট বিনামূল্যে পাওয়ার ঘটনায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংযোগের অভিযোগ উঠেছে। টিউলিপের একজন মুখপাত্র অবশ্য দাবি করেছেন, এই ফ্ল্যাট বা তার অন্য কোনো সম্পত্তির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সংযোগ নেই।

এদিকে, বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়, শেখ রেহানা এবং টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, রূপপুর প্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৫৭ হাজার কোটি টাকা) আত্মসাৎ করা হয়েছে, যা মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাচার করা হয়েছে।

টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি রূপপুর প্রকল্পের চুক্তির সময় রাশিয়ার সঙ্গে মধ্যস্থতা করেছিলেন। ২০১৩ সালে ক্রেমলিনে একটি অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার সঙ্গে তার উপস্থিতির উল্লেখ করে প্রতিবেদনটি আরও বিতর্ক উসকে দিয়েছে।

ব্রিটিশ সরকারের প্রতিক্রিয়া

যুক্তরাজ্যের প্রোপ্রাইটি অ্যান্ড ইথিকস বিভাগের একজন কর্মকর্তা এই বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। টিউলিপ এই অভিযোগগুলোকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছেন।

ব্রিটিশ লেবার পার্টির প্রধান কিয়ার স্টারমার তার প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখার কথা জানিয়েছেন। তবে, কনজারভেটিভ পার্টি তাকে তার মন্ত্রণালয় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি তুলেছে।

টিউলিপ সিদ্দিকের ফ্ল্যাট গ্রহণের ঘটনা এবং তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তাকে একটি নৈতিক সংকটের মুখে দাঁড় করিয়েছে। বিশেষ করে, একজন অর্থনৈতিক মন্ত্রীর অবস্থানে থেকে মুদ্রা পাচার এবং আর্থিক খাতে সন্দেহজনক লেনদেন রোধ করার দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় এ ধরনের অভিযোগ তার পেশাগত সততার প্রশ্ন তুলেছে।

এই বিতর্কের সুষ্ঠু তদন্ত প্রয়োজন, যা শুধুমাত্র তার ব্যক্তিগত স্বচ্ছতা নয়, বরং রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে একটি উদাহরণ সৃষ্টি করবে।

  • দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর সর্বশেষ নিউজ পড়তে ক্লিক করুন: সর্বশেষ
  • দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর ফেসবুক পেজটি ফলো করুন: dailysabasbd

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT