গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা! যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব।
প্রথম সপ্তাহেই জিম্মি ও বন্দী বিনিময়ের পরিকল্পনা। ইসরায়েল সম্মত, হামাস বলছে—পর্যালোচনা চলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি নতুন পরিকল্পনায় গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি, জিম্মি ও বন্দী বিনিময় এবং মানবিক সহায়তা পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রয়টার্সের হাতে পাওয়া ওই প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রথম সপ্তাহেই হামাসের হাতে থাকা জীবিত ও মৃত মিলে ২৮ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল ১২৫ জন ফিলিস্তিনি আজীবন দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দীকে মুক্তি দেবে এবং ১৮০ জন মৃত ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দেবে।
পরিকল্পনাটিতে উল্লেখ রয়েছে, যুদ্ধবিরতিতে হামাস সম্মতি জানালেই গাজায় জরুরি মানবিক ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাবে। পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে হামাস স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি পেলে শেষ ৩০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে।
এই পরিকল্পনার গ্যারান্টার হিসেবে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মধ্যস্থতাকারী দেশ মিশর ও কাতার। হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েল এই প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে।
তবে হামাস জানিয়েছে, তারা এখনও প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করছে এবং শুক্রবার অথবা শনিবার তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবে। হামাস স্পষ্ট করেছে, তারা অস্ত্র ত্যাগের কোনো শর্ত মেনে নেবে না এবং ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে যুদ্ধের স্থায়ী অবসান ঘটাতে হবে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলায় প্রায় ১,২০০ মানুষ নিহত হয় এবং ২৫১ জন ইসরায়েলিকে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত এই অভিযানে ৫৪,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং গাজা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধবিরতির এই নতুন প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য দুই পক্ষের মধ্যে গভীর মতপার্থক্য এখনো অন্যতম বড় বাধা। ইসরায়েল বলেছে, যুদ্ধের ইতি ঘটাতে হলে হামাসকে সামরিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা ছাড়তে হবে এবং সকল জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে। অন্যদিকে হামাস বলছে, তারা অস্ত্র ছাড়বে না এবং ইসরায়েলকে অবশ্যই সেনা প্রত্যাহার করতে হবে।