
ফরাসি সংবাদমাধ্যম ইন্টিলিজেন্স অনলাইন-এর বরাতে বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ আরব জানায়, ইসরায়েলের শীর্ষ অস্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এলবিট সিস্টেমস–এর সঙ্গে অত্যন্ত গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে এই চুক্তিটি সম্পন্ন করেছে আমিরাত।
গত মাসে এলবিট সিস্টেমস ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের একটি বড় চুক্তির ঘোষণা দিলেও তখন তারা ক্রেতা দেশের নাম প্রকাশ করেনি। প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বেজালেল মাচলিস সে সময় বলেন, এই চুক্তি তাদের “অনন্য প্রযুক্তিগত সক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি”।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আমিরাত এলবিটের ‘জে-মিউজিক এয়ারক্রাফট প্রোটেকশন সিস্টেম’-এর উন্নত সংস্করণ কিনছে। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত লেজার প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যা বিমানের দিকে নিক্ষেপ করা সারফেস-টু-এয়ার মিসাইলের সেন্সর নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম। বেসামরিক ও সামরিক—উভয় ধরনের বিমানের সুরক্ষায় এটি ব্যবহৃত হয়।
ইসরায়েলি সরকারের অনুমোদনে একটি যৌথ প্রকল্পের আওতায় এই অত্যন্ত সংবেদনশীল প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সংযুক্ত আরব আমিরাতেই উৎপাদন করা হবে বলে জানিয়েছে ইন্টিলিজেন্স অনলাইন।
চুক্তিটির মেয়াদ আট বছর এবং এটিকে ইসরায়েলের ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র রপ্তানি চুক্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির সংবেদনশীলতার কারণে চুক্তির অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
এ বিষয়ে ওয়াশিংটনভিত্তিক প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক বিলাল সাব লিঙ্কডইনে লিখেছেন, “এটি একটি বিশাল চুক্তি হলেও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ না হওয়ায় বিষয়টি তুলনামূলকভাবে আড়ালে থেকে গেছে।”
এদিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও অক্সফাম এই চুক্তির কঠোর সমালোচনা করেছে। তাদের আশঙ্কা, এমন অস্ত্র চুক্তি বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলতে পারে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইন লঙ্ঘনের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।