অভিশংসিত সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের স্থলাভিষিক্ত হবেন কে? দক্ষিণ কোরিয়ায় চোখ বিশ্ব মোড়লদের।
দক্ষিণ কোরিয়ায় আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগাম ভোটে রেকর্ড সংখ্যক ভোটার অংশ নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া আগাম ভোটে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ১ কোটি ২০ লাখেরও বেশি ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপ।
এই সংখ্যাটি দক্ষিণ কোরিয়ার মোট ৪ কোটি ৪৩ লাখ ভোটারের এক চতুর্থাংশেরও বেশি, যা আগাম ভোটের ক্ষেত্রে একটি নতুন মাইলফলক। আগাম ভোট গ্রহণ শেষ হচ্ছে শুক্রবার, আর মূল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গলবার।
এবারের নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। দেশটির অভিশংসিত সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের স্থলাভিষিক্ত হবেন কে—এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। গত ডিসেম্বরে ইউন সেনা শাসন জারি করে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্কের জন্ম দেন। পরে জাতীয় সংসদের হস্তক্ষেপে ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়।
ইউন দাবি করেছিলেন, সরকারে “রাষ্ট্রবিরোধী ও উত্তর কোরিয়া ঘনিষ্ঠ শক্তি” অনুপ্রবেশ করেছে, তাই তিনি বিরোধী রাজনীতিকদের আটক ও সেনা শাসনের ঘোষণা দেন। একই মাসে তাকে অভিশংসন করা হয়, তবে চূড়ান্তভাবে ক্ষমতা ছাড়েন চলতি বছরের এপ্রিল মাসে, যখন সাংবিধানিক আদালত অভিশংসন বৈধ ঘোষণা করে।
সর্বশেষ জনমত জরিপে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী লি জে-মিয়ং এগিয়ে রয়েছেন ৪২.৯ শতাংশ সমর্থন নিয়ে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইউনের পিপল পাওয়ার পার্টির কিম মুন-সু পেয়েছেন ৩৬.৮ শতাংশ সমর্থন। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন নিউ রিফর্ম পার্টির রক্ষণশীল প্রার্থী লি জুন-সিওক, যিনি পেয়েছেন মাত্র ১০.৩ শতাংশ ভোটার সমর্থন।
নির্বাচনী প্রচারপর্বেও উত্তেজনা বিরাজ করছে। দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশ জানিয়েছে, বিভিন্ন প্রচারসামগ্রীতে ভাঙচুরের ঘটনা বেড়েছে এবং এ-সংক্রান্ত ঘটনায় অন্তত ৬৯০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এছাড়া প্রাণনাশের হুমকির কারণে লি জে-মিয়ং বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পরছেন এবং নির্বাচনী সমাবেশে বুলেটপ্রুফ কাচ ব্যবহার করছেন বলে জানিয়েছেন। পুলিশ জানায়, এখন পর্যন্ত লি ও নিউ রিফর্ম পার্টির প্রার্থীর বিরুদ্ধে মোট ১২টি হুমকিমূলক সামাজিক মাধ্যম পোস্ট শনাক্ত করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার এই নির্বাচন কেবল একটি নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন নয়, বরং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংকট ও বিভক্তির পর এক ধরনের গণতান্ত্রিক উত্তরণ হিসেবেও দেখা হচ্ছে।