জাতিসংঘের অধীনস্থ ইনডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমার (IIMM) আজ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে ২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি, মসজিদ, কৃষিজমি ও অন্যান্য সম্পত্তি ধ্বংস ও দখল করার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী, সীমান্ত রক্ষী পুলিশ (BGP), কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সরকারি সংস্থার ভূমিকা চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের সহিংসতার পর রোহিঙ্গারা পালিয়ে যাওয়ার পর তাদের গ্রাম ও সম্পত্তি ধ্বংস করা হয় এবং সেখানে নতুন BGP ঘাঁটি নির্মাণ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, মিয়ানমারের ম্যো থু গি গ্রামে ৮০০-এরও বেশি ঘরবাড়ি, দোকান ও মসজিদ ছিল। ২০১৮ সালের মধ্যে ৪১১ একর জমি পুড়িয়ে সমতল করা হয় এবং সেখানে সীমান্ত রক্ষী পুলিশ (BGP) ঘাঁটি নির্মাণ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের গ্রাম ধ্বংস ও সীমান্ত রক্ষী পুলিশ (BGP) ঘাঁটি নির্মাণের মাধ্যমে বিভিন্ন পক্ষ লাভবান হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
গৃহমন্ত্রী (Ministry of Home Affairs), যারা BGP ঘাঁটির সম্প্রসারণ অর্থায়ন ও নির্দেশনা দিয়েছে,
সীমান্ত রক্ষী পুলিশ (BGP), যারা দখলকৃত জমি ব্যবহার করেছে,
এশিয়া ওয়ার্ল্ড কোম্পানি এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, যারা ঘাঁটি, রাস্তা ও নিরাপত্তা চৌকি নির্মাণ করেছে।
প্রতিবেদনটি জাতিসংঘ সদর দপ্তরে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের আগের দিন প্রকাশিত হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গার মানবিক সংকট ও তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অচলাবস্থা নিয়ে আলোচনা হবে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এর আগে বলেছিল, ২০১৭ সালের অভিযানে তারা রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালায়নি, তবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকতে পারে। তবে জাতিসংঘের প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক মহলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক মহলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘাত তীব্র হওয়ায় রোহিঙ্গারা আবারও সহিংসতা ও বাস্তুচ্যুত হওয়ার হুমকির মুখে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু এই সম্প্রদায়ের কিছু সদস্য অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছেন।