মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা মর্যাদা ও অধিকারের নিশ্চয়তা নিয়ে দেশে ফিরে যেতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। কক্সবাজারে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সংলাপের দ্বিতীয় দিনে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, প্রথম দিনের আলোচনায় রোহিঙ্গারা সরাসরি নিজেদের অভিজ্ঞতা, সমস্যা ও প্রত্যাশা তুলে ধরেন, যা ছিল একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। তাদের ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বর আসন্ন জাতিসংঘ সম্মেলনে তুলে ধরা হবে এবং প্রতিবেশী দেশসহ আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করাই এখন মূল লক্ষ্য।
ড. খলিলুর রহমান জানান, এই সংলাপ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিতব্য রোহিঙ্গা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের জন্য প্রস্তাবনা তৈরি। তিনি বলেন, আলোচনায় ছয়টি বিষয় বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে—রোহিঙ্গাদের নিজস্ব কণ্ঠস্বরকে প্রাধান্য দেওয়া, নিরাপদ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা, খাদ্য-চিকিৎসা-শিক্ষা সেবায় অনিশ্চয়তা কমানো, সংলাপ ও আস্থা গড়ে তোলা, মিয়ানমারের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিরসন এবং পূর্ণ জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার সক্রিয়ভাবে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলা করছে এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বও এ সমাধানে একমত। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক অংশীদাররা সহযোগিতা করতে আগ্রহী। আশা করা হচ্ছে, আসন্ন জাতিসংঘ সম্মেলনে কক্সবাজার সংলাপের প্রস্তাবনাগুলো কার্যকরভাবে আলোচিত হবে।
সংলাপে আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশেষজ্ঞ ও রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং বিভিন্ন দিক থেকে সমাধানের প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, মিয়ানমারের সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি এবং সীমান্তে বাড়তে থাকা নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রতিবেশী দেশগুলোর একযোগে কাজ করা অপরিহার্য।
ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম, প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি উইংয়ের মহাপরিচালক শাহ আসিফ রহমান উপস্থিত ছিলেন। সংলাপটি আগামীকাল শেষ হবে।