
বাজারে সিন্ডিকেট চক্রের কারসাজিতে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম বেড়ে দাঁড়ায় সর্বোচ্চ ১৪০ টাকা। তবে গতকাল রবিবার রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে।
কারওয়ান বাজার, শান্তিনগর, নয়াবাজার ও হাতিরপুলসহ রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কেজিপ্রতি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সম্ভাবনার গুজব ছড়ানোর পর থেকেই বাজারে ধস নামে।
কারওয়ান বাজারের পাইকার আব্দুল কাদের বলেন, “ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে এমন খবরে দাম পড়ে গেছে। আড়ত থেকেই কম দামে কিনছি, তাই বিক্রিও কম দামে করছি।”
রবিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংকালে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানান, “চলতি সপ্তাহের মধ্যে দাম কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে না এলে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুত রয়েছে এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে। “আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যে দাম না কমলে ২,৮০০ আমদানিকারক আবেদনের মধ্যে ১০ শতাংশ অনুমোদন দেওয়া হবে,” বলেন বশিরউদ্দীন।
তবে তিনি স্বীকার করেন, মৌসুমের শেষ, ভারী বৃষ্টি এবং সংরক্ষণের সময় ওজন কমে যাওয়া দাম বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো. জামাল উদ্দীন বলেন, “দেশে এখনো কৃষকের হাতে প্রায় ৩ লাখ মেট্রিকটন পেঁয়াজ রয়েছে। সংকটের কোনো প্রশ্নই আসে না। অসাধু চক্র আমদানির পায়তারা করছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “ট্যারিফ কমিশনের কিছু সদস্য আমদানিকারকদের প্রভাবে সুপারিশ দিয়েছে।”
অন্যদিকে, কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, “এ মুহূর্তে আমদানি অনুমোদন দেওয়া হলে কৃষক মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে। প্রথমে বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙা উচিত।”
গত সপ্তাহে হঠাৎই পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৭০ টাকার বেশি বেড়ে যায়। ট্যারিফ কমিশন তখন দ্রুত আমদানির সুপারিশ করে বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায়। তবে সরকার এখন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, যাতে কৃষকের ক্ষতি না হয় এবং বাজারও স্থিতিশীল থাকে।