
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ঘুমন্ত অবস্থায় এক মাদ্রাসাছাত্রকে গলা কেটে হত্যা করেছে তার সহপাঠী। রোববার (২৬ অক্টোবর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাটরা এলাকায় অবস্থিত আল মাদরাসাতুল ইসলামিয়া মাখফুনুল উলুম মাদ্রাসার আবাসিক কক্ষে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত ছাত্রের নাম মো. নাজিম উদ্দিন (১৩)। তিনি উপজেলার চাষীরহাট ইউনিয়নের জাহানাবাদ গ্রামের ওবায়েদ উল্ল্যার ছেলে। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত সহপাঠী আবু ছায়েদকে (১৬) আটক করেছে। সে ময়মনসিংহ জেলার টেঙ্গাপাড়া গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নাজিম ও ছায়েদ দুজনই মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্র। নাজিম ২২ পারা এবং ছায়েদ ২৩ পারা কোরআন হেফজ সম্পন্ন করেছে। প্রায় ১০ থেকে ১৫ দিন আগে টুপি পরা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে এক শিক্ষক বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। তবে ক্ষোভ পুষে রেখে ছায়েদ কয়েক দিন আগে সোনাইমুড়ী বাজার থেকে ৩০০ টাকায় একটি ধারালো ছুরি কিনে আনে। রোববার রাতে মাদ্রাসার দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে ১৪ জন ছাত্র ও একজন শিক্ষক ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত আড়াইটার দিকে ছায়েদ ঘুম থেকে উঠে ঘুমন্ত অবস্থায় নাজিমের গলা কেটে দেয়। নাজিমের গোঙানির শব্দে অন্য ছাত্র ও শিক্ষক জেগে উঠে ঘটনাটি দেখতে পান। তারা তাৎক্ষণিকভাবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে জানান।
খবর পেয়ে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি জব্দ করে এবং অভিযুক্ত আবু ছায়েদকে আটক করে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, টুপি পরা নিয়ে পূর্বের বিরোধ থেকেই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম জানান, ছায়েদকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং ঘটনার পেছনের কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মাদ্রাসাটি এলাকায় বেশ পরিচিত ও সুনামধারী প্রতিষ্ঠান। তারা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড অভিভাবক সমাজকে শঙ্কিত করেছে। তারা দোষীর কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলছে এবং মাদ্রাসার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।