ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ‘নো হল পলিটিক্স’ দাবিতে শুক্রবার গভীর রাতে উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। রাত সাড়ে ১২টার পর থেকেই বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে যোগ দেন এবং রাত ১টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানান।
রাত ২টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করে জানান, ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তা বহাল থাকবে এবং প্রতিটি হল প্রশাসন সেই নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। তবে শিক্ষার্থীরা এ আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করে ‘হল পলিটিক্সের সম্পূর্ণ অবসান’ দাবি তোলেন।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ হলে সকল প্রকাশ্য ও গোপন রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এর পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উল্লাস প্রকাশ করেন।
এর আগে রাত সাড়ে বারোটায় রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকের তালা ভেঙে বিক্ষোভে নামেন, যা দ্রুত অন্য হলগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন— “হল পলিটিক্স নো মোর”, “শিক্ষা ও রাজনীতি একসাথে চলে না”, “পড়ালেখা ও গেস্টরুম একসাথে চলে না” ইত্যাদি।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, হলভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস করে, সহিংসতা উসকে দেয় এবং শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি বাড়ায়। রোকেয়া হলের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা মুন্নি বলেন, হল রাজনীতি গণরুম, গেস্টরুম ও কৃত্রিম সিট সংকট তৈরি করে এবং হলগুলোকে টর্চার সেলে পরিণত করে।
শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে ছিল— বিদ্যমান সকল রাজনৈতিক কমিটি বাতিল ও কমিটি সদস্যদের সিট খালি করা, গোপন ও প্রকাশ্য কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা, প্রশাসনের দুর্বলতা স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া, ডাকসু নির্বাচন কার্যকর করা এবং ১৭ জুলাইয়ের নীতিমালা বাস্তবায়ন।
রাত তিনটার দিকে শিক্ষার্থীরা হলে ফিরতে শুরু করলেও প্রতিবাদ চলতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে প্রতিটি হলে প্রশাসনিক তৎপরতা বাড়ানো হবে এবং নীতি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে।