পার্বত্য সীমান্তে নতুন দুই ব্যাটালিয়ন স্থাপন পরিকল্পনা, ৩০ নতুন বিওপি হবে দুর্গম এলাকায় - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
জাবিতে প্রাণ রসায়ন বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিং বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাবের নতুন কমিটি ঘোষণা বিদেশে নতুন আগত বাংলাদেশিদের প্রতি অমানবিক আচরণ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ফজলে এলাহী সাবেক সেনাকর্মকর্তার জবানিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর প্রকৃত চিত্র কাতার–সৌদি মধ্যস্থতায় পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত ‘আপাতত স্থগিত’ করল আফগানিস্তান পাকিস্তান আবারও আফগান সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করলে আফগান বাহিনী জবাব দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত বালিয়াকান্দিতে টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সের ক্লাস করতে এসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা আটক কুবির তিন শিক্ষার্থী নোবিপ্রবি মডেল ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্সে পুরস্কার জয়ী রাজবাড়ীর কালুখালীর গুণী সংগীতশিল্পী জাহিদ হাসানের মৃত্যু

পার্বত্য সীমান্তে নতুন দুই ব্যাটালিয়ন স্থাপন পরিকল্পনা, ৩০ নতুন বিওপি হবে দুর্গম এলাকায়

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় সোমবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৪৭ বার দেখা হয়েছে

পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম ও অরক্ষিত সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা জোরদারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দুইটি নতুন ব্যাটালিয়ন স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে। এই পরিকল্পনার আওতায় নতুন করে ৩০টি বর্ডার আউট পোস্ট (বিওপি) স্থাপন করা হবে। বর্তমানে এটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। রোববার (৫ অক্টোবর) খাগড়াছড়ির রামগড়ের ৪৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার করেরহাট সীমান্তে ‘ছোট ফরিংগা বিওপি’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান বিজিবি চট্টগ্রাম দক্ষিণ-পূর্ব রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সোহেল আহমেদ।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্ত বাংলাদেশের সমতল জেলার সীমান্তের মতো নয়। এসব এলাকায় রাস্তা ও যোগাযোগব্যবস্থা অত্যন্ত জটিল, বহু এলাকা ঘন বন ও পাহাড়বেষ্টিত। যেমন রাঙামাটির বাঘাইহাট ও মারিশ্যা ব্যাটালিয়নের আওতাধীন এলাকায় এমন বিওপি রয়েছে, যেখানে পৌঁছাতে পায়ে হেঁটে চার দিন সময় লাগে। ফলে সীমান্তে নিয়মিত টহল ও নজরদারি পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়ে। নতুন দুটি ব্যাটালিয়ন স্থাপন করা হলে এসব দুর্গম সীমান্ত এলাকা কার্যকরভাবে সুরক্ষিত করা সম্ভব হবে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সোহেল আহমেদ জানান, সীমান্ত সুরক্ষায় সরকারের নেওয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন ৭৩টি বিওপি স্থাপনের কাজ চলছে। এর মধ্যে দেশের বিভিন্ন সীমান্তে ইতোমধ্যে ৬৯টি বিওপি স্থাপন করা হয়েছে, বাকি চারটি খুব শিগগিরই সম্পন্ন হবে। গত এক বছরে স্থাপিত ১০টি নতুন বিওপির মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব রিজিয়নের আওতায় রয়েছে পাঁচটি। নতুন বিওপি স্থাপনের ফলে সীমান্ত সুরক্ষা, চোরাচালান রোধ ও অন্যান্য সীমান্ত অপরাধ দমনে বিজিবির সক্ষমতা ও দক্ষতা আরও বেড়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

রামগড় ৪৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন ফটিকছড়ির দাঁতমারা ইউনিয়ন ও মীরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়নের মধ্যবর্তী প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই পাহাড় ও বনভূমি বেষ্টিত থাকায় অরক্ষিত ছিল। এসব এলাকায় বিজিবির অভিযান পরিচালনা ও টহল দেওয়া ছিল অত্যন্ত কষ্টকর। ছোট ফরিংগা বিওপি স্থাপনের মাধ্যমে বহুদিনের সেই সীমান্ত এলাকা এখন সুরক্ষিত হলো। স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিজিবির আভিযানিক কার্যক্রমও এখন আরও গতিশীল হবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্বও বিজিবি পালন করে আসছে। সীমান্ত সুরক্ষা, চোরাচালান রোধ, মাদক ও অস্ত্র পাচার প্রতিরোধ এবং সীমান্তবর্তী জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিজিবি এখন দেশের মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজিবির গুইমারা সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. মিজানুর রহমান ও ৪৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আহসান উল ইসলাম। বিজিবি কর্মকর্তারা জানান, নতুন বিওপি স্থাপনের ফলে সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি মাদক, অস্ত্র ও পশুপাচারসহ সীমান্ত অপরাধ নিয়ন্ত্রণে বিজিবি আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।

বিজিবি রিজিয়ন কমান্ডার সতর্ক করে বলেন, সীমান্তে বিএসএফের কোনো ধরনের ‘পুশ ইন’ প্রচেষ্টা বা সীমান্ত লঙ্ঘনের ঘটনা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা হবে। তিনি বলেন, কিছু বাংলা ভাষাভাষী ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশি পরিচয়ে সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করানোর চেষ্টা দেখা যাচ্ছে, যা কখনোই মেনে নেওয়া হবে না। সীমান্ত নিরাপত্তা এখন সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার, এবং সেই লক্ষ্যেই বিজিবি দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

সরকারের অনুমোদন পেলে নতুন দুই ব্যাটালিয়ন ও ৩০ বিওপি স্থাপনের কাজ দ্রুত শুরু হবে। এতে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম ও সংবেদনশীল সীমান্ত এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার হবে, সীমান্ত অপরাধ হ্রাস পাবে এবং স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রা আরও নিরাপদ ও স্থিতিশীল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন কর্মকর্তারা।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT