ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়) বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ ও পেজে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার জন্য মানবজমিন পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি কামরুল হাসান ‘Afnan Raj’ নামের একটি ফেক আইডি ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, ফেসবুকের ‘Find Your Account’ অপশনে কামরুল হাসানের ব্যক্তিগত ফোন নাম্বার দিয়ে সার্চ করলে সেই নাম্বারে ‘Afnan Raj’ নামক একটি একাউন্ট পাওয়া যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপ ও পেজে ওই আইডি থেকে ব্যক্তিগত আক্রমণ, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং সাংবাদিকদের নিয়ে রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে মন্তব্য করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে পাওয়া এক স্ক্রিনশটে দেখা যায়, ওই আইডি থেকে লেখা হয়েছিল—“সাংবাদিকরা সব শিবির। আপনারা অধিকাংশ বাম।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, “এর আগেও আমরা দুইবার নোটিশ দিয়েছিলাম যাতে ফেক আইডির বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফেক আইডি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমরান হোসেন প্রধান বলেন, “এই ফেক আইডি থেকে আমাকে একাধিকবার কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা হয়েছে। ছাত্রদল ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক পোস্ট দেওয়া হতো। কখনও প্রশাসনের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মন্তব্য করেছে।”
একই অভিজ্ঞতার কথা জানান ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ হোসাইন। তিনি বলেন, “আমাকে প্রায়ই ফেসবুকে ট্রল করা হতো। সম্প্রতি এই আইডি থেকে আমাকে ‘চা ওয়ালা প্রক্টর’ বলে অপমানজনক মন্তব্য করা হয়। একজন স্বাভাবিক মানুষ এমন হীন কাজ করতে পারে না। প্রশাসনের উচিত এসব ফেক আইডির মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।”
ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরপরই ‘Afnan Raj’ নামক ফেসবুক আইডিটি ডিএক্টিভেট করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট ফোন নাম্বারটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ফেক আইডির অভিযোগ ছাড়াও অতীতে কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সাংবাদিকতার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি অভি সাব্বিরের সঙ্গে তার কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কিছু ছবি মিলেছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কামরুল হাসান বলেন, “আমার অন্য একটি ফোনের নাম্বার দিয়ে ওই একাউন্ট খোলা হয়েছিল। ফোনটা রুমেই থাকত। ওই ফেক আইডি আমার নয়।”
বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সত্যতা যাচাই শেষে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে।