শিক্ষার নামে অব্যবস্থা: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োজন কাঠামোগত সংস্কার - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
ডেনমার্ক অভিবাসন নীতিতে আসছে কড়াকড়ি শেকৃবিতে তিনদিনব্যাপী জাতীয় আলোকচিত্র প্রদর্শনীর সফল সমাপ্তি ইবিতে খেলাফত ছাত্র মজলিসের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ঢাকায় হবে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় শেকৃবিতে তিনদিনব্যাপী জাতীয় আলোকচিত্র প্রদর্শনীর সফল সমাপ্তি শিক্ষার নামে অব্যবস্থা: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োজন কাঠামোগত সংস্কার নাবালিকা মেয়ের বিয়ে, কড়া পদক্ষেপ ইমারতে ইসলামিয়ার মৌলভীবাজারে সাহাবি নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে নারী আইনজীবী আটক কুমিল্লার মুরাদনগরে দরজা ভেঙে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ ও ভিডিও, গ্রেপ্তার ৫ আওয়ামী লীগ নেতার বিতর্কিত বক্তব্য – বিএনপি-জামায়াত ফিফটি-ফিফটি ভোট পাক

শিক্ষার নামে অব্যবস্থা: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োজন কাঠামোগত সংস্কার

সাবাস বাংলাদেশ ডেস্ক
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫
  • ১০ বার দেখা হয়েছে

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের উচ্চশিক্ষার প্রায় ৭০ শতাংশ পরিচালনা করছে, যার অধীনে রয়েছে ২,২৫৭টি কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সেখানে পড়াশোনা করছে প্রায় ৩৪.৫ লাখ শিক্ষার্থী। তবে শিক্ষার মান নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিগত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন অনিয়ম ও সমন্বয়হীনতায় এই খাতটি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

রাজনৈতিক বিবেচনায় শর্তহীনভাবে কলেজ অধিভুক্তি, মানহীন শিক্ষক নিয়োগ, ভর্তি পরীক্ষা বাতিল, ক্লাসে অনুপস্থিতি, বাজেট স্বল্পতা, এবং বিশ্ববিদ্যালয়-মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব—এসবই সংকটের মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

৫ আগস্টের পর নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম আমানুল্লাহ নতুন পরিকল্পনায় শিক্ষার মানোন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছেন। এর অংশ হিসেবে চলছে আকস্মিক পরিদর্শন, তথ্য সংগ্রহ ও শর্ত না মানা কলেজগুলোর অধিভুক্তি বাতিল। তবে তিনি মনে করেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে বড় ধরনের কাঠামোগত সংস্কার এখন সময়ের দাবি।

উপাচার্য বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মানোন্নয়ন সম্ভব হবে না যদি অধিভুক্ত কলেজগুলোর মান উন্নয়ন না হয়। ক্লাসে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির কারণ খুঁজে বের করে তা দূর করতে বিভিন্ন ইনসেনটিভ ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য কার্যক্রমও চালুর কথা জানান তিনি।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যমতে, প্রতিবছর প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে বের হচ্ছে। তবে একাডেমিক ও শিল্প খাতের মধ্যে সংযোগের অভাব তাদের বাস্তবজীবনে দক্ষতা প্রয়োগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এছাড়া শিক্ষক সংকট, পরীক্ষার মান ও মূল্যায়নে দুর্বলতা, সাজেশন-নির্ভর প্রস্তুতি ইত্যাদি সমস্যা ব্যাপক।

সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করছেন, গত এক দশকে দলীয় বিবেচনায় প্রায় ৮০০টি নতুন কলেজ অনুমোদন ও শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতার অভাব শিক্ষার মানহানির বড় কারণ। সরকারি কলেজের প্রশাসন পরিচালনা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর, যেখানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জবাবদিহির সুযোগ সীমিত। অন্যদিকে বেসরকারি কলেজগুলো পরিচালিত হচ্ছে দলীয় প্রভাবাধীন গভর্নিং বডির মাধ্যমে, যারাও একাডেমিক কার্যক্রম তদারকিতে গাফিলতি করে থাকে।

মনিটরিং ও ইভালুয়েশন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে শতাধিক কলেজ আকস্মিক পরিদর্শনে নানা অনিয়ম ধরা পড়েছে। কলেজগুলোর শর্ত না মানা ও অবকাঠামোগত ঘাটতির কারণে কিছু অধিভুক্তি বাতিল করা হয়েছে। একটি মনিটরিং সফটওয়্যার ও জেলাভিত্তিক সেল গঠন করে তদারকি জোরদার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য শহীদ মুগ্ধর নামে বৃত্তি, নতুন ভর্তি পরীক্ষা প্রবর্তনসহ বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা আরও বলেন, বেসরকারি কলেজে শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে গভর্নিং বডি গঠন, সরকারি কলেজে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা ও শিক্ষক রাজনীতি বন্ধের মতো প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা মানোন্নয়ন সম্ভব নয়।

বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৫৫৫টি সরকারি ও ৮৮১টি অনার্স কলেজসহ মোট ২,২৫৭টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩৪ লাখ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। শিক্ষার্থীর সংখ্যার দিক থেকে এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT