প্রবীণ সাংবাদিক ও কলাম লেখক বিভুরঞ্জন সরকার নিখোঁজের একদিন পর মেঘনা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২২ আগস্ট) দুপুরে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার চর বলাকি সংলগ্ন নদীতে ভাসমান মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে। খবর পেয়ে কলাগাছিয়া নৌপুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
৭১ বছর বয়সী বিভুরঞ্জন সরকার দীর্ঘদিন ধরে দৈনিক আজকের পত্রিকা-তে জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে বনশ্রীর কার্যালয়ে যাওয়ার কথা বলে তিনি বাসা থেকে বের হন। কিন্তু পরে জানা যায় তিনি অফিসে যাননি। তার মোবাইল ফোনটিও বাসায় ফেলে যান। রাত অবধি বাসায় না ফেরায় ছেলে ঋত সরকার রমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
কলাগাছিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সালেহ আহমেদ পাঠান জানান, শুক্রবার দুপুরে খবর আসে নদীতে একটি লাশ ভাসছে। বিকেল তিনটার দিকে ট্রলারযোগে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। লাশের পরনে ছিল হাফ হাতা শার্ট এবং গলায় ঝুলছিল চশমা। মাথায় কাঁচাপাকা চুল ও টাক দেখা যায়। লাশের ছবি রমনা থানায় পাঠানো হলে স্বজনরা বিভুরঞ্জন সরকার হিসেবে শনাক্ত করেন।
রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কীভাবে তিনি সেখানে গেলেন এবং মৃত্যুর কারণ কী, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নৌ–পুলিশের নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, মরদেহ দেখে ধারণা করা হচ্ছে তার মৃত্যু হয়েছে একদিন আগে। আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি, তবে দেহ কিছুটা বিকৃত হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
রমনা থানার তদন্ত কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম জানান, পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করছে এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে তার গতিপথ খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। এছাড়া অন্যান্য সূত্র থেকেও তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।
আজকের পত্রিকা সূত্রে জানা গেছে, বিভুরঞ্জন সরকার ১৬ আগস্ট থেকে সাত দিনের ছুটিতে ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে অফিসে যাওয়ার কথা বলে বের হলেও কোথাও যাননি। তার ভাই চিররঞ্জন সরকারও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিখোঁজ হওয়ার তথ্য জানিয়ে খোঁজখবর চেয়েছিলেন।
প্রবীণ এই সাংবাদিকের মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে সহকর্মী মহলে। পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্তের পর স্পষ্ট হবে বিভুরঞ্জন সরকারের মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি অন্য কোনো কারণে ঘটেছে।