জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে নির্মিত দেশের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য ২৪’-এর উদ্বোধনী আয়োজনে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তুলে হট্টগোল করেছেন ছাত্রদল নেতা নবীনুর রহমান নবীন। ৩১ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন ফজিলাতুন্নেসা হলের সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের পর তিনি এ প্রতিবাদ করেন। উপস্থিত ছিলেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
নবীনুর রহমান নবীন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের (২০০৯-১০ সেশন) সাবেক শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি। তিনি ডকুমেন্টারিতে নিজের ও ছাত্রদলের অবদান না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই ডকুমেন্টারিতে ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। ছাত্রদলের অবদানকে অস্বীকার করা হয়েছে। আমরাও আন্দোলনে ছিলাম, জেল-জুলুম-মামলার শিকার হয়েছি।” প্রতিবাদের সময় তার সঙ্গে ছিলেন শাখা ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক রোমান রাশিদুল ও হাসান শাহরিয়ার রমিম।
আয়োজকরা জানান, ডকুমেন্টারি তৈরির জন্য তাদের হাতে মাত্র দুইদিন সময় ছিল এবং একটি মাত্র ক্যামেরা দিয়ে ২৫ থেকে ৩০ জনের ইন্টারভিউ নেওয়া খুব কঠিন ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট ও পর্যাপ্ত সময় না পাওয়ায় তারা পূর্ণাঙ্গ ডকুমেন্টারি নির্মাণ করতে পারেননি। এর মধ্যেই তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পাবলিক ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়ে জুলাই আন্দোলনের সংশ্লিষ্ট ছবি ও ফুটেজ চেয়েছিলেন। সাড়া দেওয়া শিক্ষার্থীদের পাঠানো এবং সাংবাদিকদের কাছ থেকে পাওয়া উপকরণ দিয়েই ডকুমেন্টারি তৈরি হয়েছে। যিনি অভিযোগ তুলেছেন, তার কোনো ছবি বা ভিডিও ফুটেজ তারা পাননি, ফলে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি।
ঘটনাটিকে ঘিরে কিছু শিক্ষক দাবি করেছেন, এর পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের এক প্রভাবশালী শিক্ষকের প্রভাব রয়েছে। তবে তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
ঘটনার পর প্রতিক্রিয়ায় উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “আজকে যে একটা বিশেষ পরিস্থিতি দেখেছি, এটাও জাহাঙ্গীরনগরের বৈশিষ্ট্য, এটাও ২৪-এর অর্জন। খারাপভাবে দেখার প্রয়োজন নেই। প্রতিটি কাজের মধ্যে ভুল থাকতে পারে, এখানে শেখার সুযোগ রয়েছে। একইভাবে প্রতিবাদের ভাষাতেও শিক্ষিত হওয়া প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সমালোচনা ও কুৎসার পার্থক্য শিখবে, পাশাপাশি প্রশংসা ও পূজার পার্থক্যও বুঝে নিতে শিখবে।”