সারা দেশে ছিনতাই, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগের দাবিতে রোববার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে বিক্ষোভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবী, অন্তর্বর্তী সরকারের সাত মাস অতিক্রান্ত হলেও এখনও দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগে এখনও দেশে নানা প্রান্তে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। সারাদেশে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনকহারে বেড়ে গেছে। কিন্তু সরকার কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এখনো অপরাধীরা চারিদিকে ঘুরছে। আমাদের জীবনের নিরাপত্তা নেই, নারীরা নির্ভয়ে ঘর থেকে বের হওয়ার সুযোগ নেই।
এদিকে রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ৩টার দিকে রাজধানীর বারিধারায় নিজ বাসভবনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ‘আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য সবধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। যেহেতু তারা প্রচুর টাকা দেশ থেকে স্থানান্তর করেছে, ওই টাকা এখন তারা ব্যবহার করছে। তবে আমরা এটা কোনও অবস্থাতেই করতে দেবো না।’ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দেশের বিদ্যমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরকার সজাগ ও সচেতন আছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘যারা এসব করছেন, তাদের ঘুম আমি হারাম করে দেবো। তারা কোথাও স্থান পাবে না।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এরইমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি এরইমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ইনস্ট্রাকশন দিয়েছি। আগামীকাল (সোমবার) থেকে তারা টহল কার্যক্রম বৃদ্ধি করবে। কোথাও কিছু যেন না ঘটে, এজন্য তারা ব্যবস্থা নেবে।’ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা এতে কোনও গাফিলতি করলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন উপদেষ্টা।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের থেকে অনেক উন্নতি হয়েছে এবং এটা আরও উন্নতি হতে থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মধ্যরাতের সংবাদ সম্মেলনে যাবার সময় যারা রিকশা, সি এন জি তে যাবার সময় ছিনতাইয়ের স্বীকার হয়েছেন সাংবাদিকেরা। যাবার পথে ফোন, মানিব্যাগ নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এ ”সংবাদ সম্মেলন” জরুরী হিসেবে ডাকলেও এটি বিগত সরকারের কপি পেস্ট বক্তব্য বলে অভিমত দিয়েছেন নেটিজেনরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার বিশেষ কোন ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগ এর উপর দায় চাপানো বিগত সরকারের “বিএনপি/জামাত” এর উপর দোষ দেয়ার শামিল।
এদিকে জনপ্রিয় অনলাইন এক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য পুলিশ ছাড়াও বিদ্যমান আর্মির ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার থাকা স্মরণ করিয়ে দিন। তিনি তার স্ট্যাটাসে জানান, “আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতার কথা আলাপের আগে কি আমাদের এটা বিবেচনা করা উচিৎ নয় যে আর্মি পুর্ণ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে এইড টু সিভিল পাওয়ার মাঠে মোতায়েন আছে!!”
তবে আওয়ামী লীগের ভার্চুয়াল মিটিং বলা ” যে শহরে আমরা থাকবো না, সে শহরে আমরা কাউকে ঘুমাতে দিবনা।” কথাটাকে হেসে উড়িয়ে দেয়া উচিৎ হয়নি বলে অভিমত অনেকের।
প্রথম আলো ও ঢাকা ট্রিবিউন এর সাবেক সাংবাদিক এবং মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক আহমেদ জাইফ জানান,
“যে বিষয়টা আমার কাছে ইন্টারেস্টিং লাগছে সেটা হলো এসব অধিকাংশ স্ট্যাটাসের সাথেই সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, ভিডিও এবং ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে। এই সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বা বিশেষ সময়ের ভিডিওর উৎসটা কি? ক্রাইম রিপোর্টিং এর অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি এসব ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা বেশ কঠিন। যার সিসি ক্যামেরা সে শেয়ার করে না ভয়ে। আর পুলিশ সংগ্রহ করলেও দেয় না “তদন্তের খাতিরে” দেয়া যাবে না বলে। এখন কি তবে সবাই এমনি এমনি শেয়ার করে দিচ্ছেন? ইন্টারেস্টিং!
দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর সর্বশেষ নিউজ পড়তে ক্লিক করুন: সর্বশেষ
দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর ফেসবুক পেজটি ফলো করুন: dailysabasbd