২০২৬ সালের হজ খরচ কমানোর চেষ্টা সরকারের, প্যাকেজ ঘোষণা আগস্টে - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
গাজায় ত্রাণ নেওয়ার সময় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ গেল ৭১ জনের জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশে এলজিবিটিকিউ নিয়ে কাজ করবে: মিলল গোপন প্রমাণ ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যে ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা লালমনিরহাট বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ – ভূরাজনৈতিক শঙ্কা ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার যুগপৎ জাগরণ রোহিঙ্গাদের ওপর আরাকান আর্মির নির্মম নির্যাতনের তথ্য, ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ শেষ হলো বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়া ‘এক্সারসাইজ টাইগার লাইটনিং-২০২৫’ পর্তুগালে ভয়াবহ দাবানল: সাতজনের মৃত্যু, বহু এলাকা পুড়েছে সাপে কেটেছিল এক সাপুড়েকে, সেই সাপই কাঁচা চিবিয়ে খেলেন আরেক সাপুড়ে পাকিস্তানের সঙ্গে তেল উন্নয়ন চুক্তির ঘোষণা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শেরপুরে মাছরাঙা টেলিভিশনের ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

২০২৬ সালের হজ খরচ কমানোর চেষ্টা সরকারের, প্যাকেজ ঘোষণা আগস্টে

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫
  • ২৭ বার দেখা হয়েছে
হজ ২০২৬

আগামী বছরের হজ উপলক্ষে এবার ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। অতীতের যেকোনো বছরের তুলনায় এবার আগেভাগেই হজ কার্যক্রমের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। খরচ কমানো থেকে শুরু করে নিবন্ধন ও সেবার অর্থ স্থানান্তরের সময়সূচি কঠোরভাবে মানা, সবকিছু নিয়েই চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। সৌদি আরবের দেওয়া রোডম্যাপ অনুযায়ী একের পর এক সময়সীমা পূরণ করতে হবে, নইলে হজ কার্যক্রম অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে—এমন হুঁশিয়ারি আসায় সরকার এবার কোনো ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না।

আগামী আগস্টের শুরুতেই ২০২৬ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণা করতে যাচ্ছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বর্তমানে সৌদি আরবের প্রান্তের খরচ ও বিমান ভাড়ার নির্ধারণের অপেক্ষায় রয়েছে মন্ত্রণালয়। এবারের সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ-১ এ হজ করতে খরচ হয়েছে ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা, আর প্যাকেজ-২ এ ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। বেসরকারি ব্যবস্থায় সর্বনিম্ন খরচ নির্ধারিত হয়েছিল ৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৫৬ টাকা, যার ভিত্তিতে বিভিন্ন হজ এজেন্সি তাদের প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তবে সরকারের লক্ষ্য এবার স্পষ্ট—যেভাবেই হোক, হজ খরচ কমাতে হবে যাতে সাধারণ মানুষের জন্য হজে যাওয়া সহজ হয়। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক স্পষ্টভাবেই বলেছেন, “আমরা চাই হজের খরচ কম হোক, যাতে বেশি সংখ্যক মানুষ হজে যাওয়ার সুযোগ পায়। যদি সৌদি আরব ও আমাদের প্রান্তে খরচ কমানো যায়, তাহলে সেই সুফল সরাসরি হজযাত্রীদের কাছে পৌঁছাবে।”

ইতোমধ্যেই সৌদি সরকার তাদের ‘নুসুক মাসার’ প্ল্যাটফর্মে ২০২৬ সালের হজ কোটা প্রকাশ করেছে। চলতি বছরের মতো আগামী বছরও বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালনের সুযোগ পাবেন—যার মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা থাকবে। কিন্তু সমস্যা হলো, গত দুই বছর বাংলাদেশ সেই কোটা পূরণ করতে পারেনি। এবার সেই ঘাটতি পূরণ করাই সরকারের একটি বড় লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে সময়ের আগে নিবন্ধন শেষ করা, অর্থ পাঠানো এবং সেবা নিশ্চিত করা—সবই যথাসময়ে সম্পন্ন করতে হবে।

সৌদি সরকারের রোডম্যাপ অনুযায়ী ২০২৬ সালের হজ চাঁদ দেখা সাপেক্ষে অনুষ্ঠিত হবে মে মাসের শেষ সপ্তাহে। কিন্তু প্রস্তুতির সময়সীমা এবার বহু আগেই শুরু হয়েছে। আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যেই হজযাত্রীদের কাছ থেকে পুরো প্যাকেজের অর্থ সংগ্রহ করে নিবন্ধন শেষ করতে হবে। এরপর ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে সেই টাকা সৌদি প্রান্তে পাঠাতে হবে। শুধু তা-ই নয়, ৪ জানুয়ারি ‘নুসুক মাসার’ প্ল্যাটফর্মে সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি করতে হবে। ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে মক্কা ও মদিনায় হজযাত্রীদের থাকার জায়গা এবং পরিবহন ব্যবস্থা সংক্রান্ত অর্থ স্থানান্তরের কার্যক্রম। এই প্রতিটি ধাপই সময়মতো সম্পন্ন না হলে হজ আয়োজন চরম ঝুঁকিতে পড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সময়সীমা হচ্ছে ৯ নভেম্বর। ওইদিন বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক হজচুক্তি সই হবে। এই চুক্তির ওপর নির্ভর করছে পুরো হজ পরিচালনার কাঠামো। ফলে এই সময়সীমার প্রতিটি ধাপই সরকারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই পুরো ব্যবস্থাপনাকে সফল করতে ইতিমধ্যে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সঙ্গেও বৈঠক করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সরকারি ও বেসরকারি খাতে সমন্বয় করে একযোগে কাজ শুরু হয়েছে যাতে সবকিছু সঠিক সময়ে সম্পন্ন হয়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হজ হচ্ছে একটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় কর্মযজ্ঞ, যার একটি অংশ বাংলাদেশে, অপর অংশ সৌদি আরবে। তাই দুই দেশের মধ্যে সময় ও নিয়মকানুনের সামঞ্জস্য না থাকলে হজ কার্যক্রম থমকে যেতে পারে। এজন্য প্রস্তুতির কোনো দিকেই শিথিলতা রাখা হচ্ছে না।

সরকার এবার শুধু খরচ কমাতে নয়, বরং হজযাত্রীদের অভিজ্ঞতা উন্নত করতেও নজর দিচ্ছে। খাবার, আবাসন, পরিবহন, চিকিৎসা সেবা, গাইড—সবই উন্নতমানের ও সময়মতো সরবরাহ করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলো। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় একে শুধুমাত্র ধর্মীয় বিষয় হিসেবে নয়, জাতীয় দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করছে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT