ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ইরানের ওপর আর্থিক, বাণিজ্যিক ও ভ্রমণ সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেছে। পদক্ষেপটি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘনের কারণে নেওয়া হয়েছে। ইইউ-এর ঘোষণায় বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, নির্দিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর জড়িত পদক্ষেপ কার্যকর হবে। তেলের রফতানি সীমিত করা, সোনা ও কিছু সামরিক সরঞ্জাম কেনা-বিক্রি বন্ধ করা এবং উল্লেখিত কর্মকর্তাদের ইইউ-ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা এর মধ্যে রয়েছে।
জাতিসংঘ ২৮ সেপ্টেম্বর ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ও অন্যান্য পদক্ষেপ পুনর্বহাল করেছে। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি এই উদ্যোগে নেতৃত্ব দিয়েছে, যা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনার পর নেওয়া হয়েছে। ইরান এই পদক্ষেপকে অবৈধ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং জাতিসংঘে তার দূতকে প্রত্যাহার করেছে। দেশটি অভিযোগ করছে যে, নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের মাধ্যমে ইরানের স্বতন্ত্র নীতি ও অর্থনৈতিক স্বায়ত্তশাসন ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে কূটনৈতিক আলোচনায় ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। ইসরায়েল পদক্ষেপটিকে স্বাগত জানিয়েছে এবং এটিকে “পারমাণবিক অস্ত্রধারী ইরান প্রতিরোধের জন্য গুরুত্বপূর্ণ” হিসেবে উল্লেখ করেছে। অন্যদিকে রাশিয়া ও চীন এই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের বিরোধিতা করেছে, তবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
বাংলাদেশ, যা পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন দক্ষিণ এশিয়ার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়ে থাকে, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির স্বচ্ছতা ও নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব তুলে ধরেছে। দেশটি আশা প্রকাশ করেছে যে, ইরান কূটনৈতিক আলোচনায় ফিরে এসে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও পারমাণবিক নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি ইরানকে কূটনৈতিক চাপের মধ্যে রাখলেও, আলোচনার জন্য দরজা এখনও খোলা আছে। আন্তর্জাতিক মহলের নজর এখন ইরানের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপের দিকে।