কলকাতা মিশনে যোগদানের আগেই কোরবানি বন্ধের নির্দেশ, দ্য হেগ থেকে অবিলম্বে দেশে ফেরার আদেশ
কলকাতায় বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার হিসেবে জুনের প্রথম সপ্তাহে যোগদানের কথা ছিল শাবাব বিন আহমেদের। তবে দায়িত্ব গ্রহণের আগেই তিনি ঐতিহ্যগতভাবে চলে আসা কোরবানি কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দেন, যা দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
দায়িত্বে যোগ না দিয়েই কলকাতা মিশনে কোরবানি বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন শাবাব। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি কোরবানি কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি। যদিও কর্মকর্তারা বিষয়টির ধর্মীয় ও সামাজিক সংবেদনশীলতার দিক তুলে ধরেন, তা উপেক্ষা করেন শাবাব। এমনকি তাকে কোরবানির সময়সীমা শেষে দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি তা নাকচ করে ২ জুন দায়িত্ব গ্রহণের ঘোষণাসহ কোরবানির সকল প্রস্তুতি বন্ধের নির্দেশ দেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে মিশনের অভ্যন্তরে অসন্তোষ ও বিভ্রান্তি দেখা দেয়। কর্মকর্তাদের মধ্যে কেউই তার এ অবস্থানের সঙ্গে একমত ছিলেন না। বিষয়টি মিশনের বাইরেও প্রকাশ পেয়ে বিতর্কিত হয়ে ওঠে।
গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শাবাব বিন আহমেদ বলেন, “আমরা কূটনীতিকেরা দেশের জন্য কাজ করি। যেখানে কাজ করব, সেখানকার পরিবেশ ও পরিস্থিতির কথা মাথায় রাখা দরকার।” তিনি আরও বলেন, “হোস্ট কান্ট্রির রীতিনীতি মেনে চলা উচিত এবং সেখানে আস্থা অর্জন করা কূটনীতিকদের দায়িত্ব।”
তবে কলকাতা মিশনে কোরবানির প্রচলন দীর্ঘদিনের। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এ প্রথা চালু রয়েছে। প্রতিবছর কোরবানির পশুর মাংস স্থানীয় এতিমখানায় এবং মুসলিম বাসিন্দাদের মধ্যে বিতরণ করা হয়ে থাকে।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার এক দাপ্তরিক আদেশে শাবাব আহমেদের কলকাতায় ডেপুটি হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ বাতিল করে। পাশাপাশি তাকে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে বাংলাদেশ দূতাবাসে তার বর্তমান দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়ে অবিলম্বে ঢাকায় ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২১ নভেম্বর কলকাতা উপহাইকমিশনে উপহাইকমিশনার হিসেবে তার নিয়োগের আদেশ জারি করা হয়েছিল, যা এ আদেশের মাধ্যমে বাতিল করা হয়েছে।