
একসময় বর্ষাকালে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের আতঙ্ক থাকলেও এখন বছরের যে কোনো সময়েই ডেঙ্গু সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন, অপরিকল্পিত নগরায়ন ও আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতার কারণে এডিস মশার বিস্তার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে।
কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে একদিকে মশার বংশবিস্তার রোধ করতে হবে, অন্যদিকে ভ্যাকসিন ব্যবহারের দিকেও নজর দিতে হবে। তবে কার্যকর ও নিরাপদ টিকা নিয়ে এখনো রয়েছে নানা প্রশ্ন ও বিতর্ক।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর জন্য দুটি টিকার অনুমোদন দিয়েছে—ফ্রান্সের “ডেঙ্গাভেক্সিয়া” এবং জাপানের “কিউডেঙ্গা”। কিন্তু এই টিকাগুলোর ব্যবহারে বয়সসীমা, পূর্বে আক্রান্ত হওয়া এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত নানা সীমাবদ্ধতা থাকায় বাংলাদেশে সেগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোশতাক হোসেন বলেন, “টিকা আবিষ্কৃত হলেও তা সবার জন্য উপযোগী নয়। ব্যবহারে সতর্কতা দরকার।”
কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার মনে করেন, “টিকার অনুমোদনের আগে ডেঙ্গুকে মহামারি (Epidemic) হিসেবে ঘোষণা করতে হয়। কিন্তু সরকার সেটি করতে চাইছে না, কারণ এতে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে।”
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথ (NIH) উদ্ভাবিত TV005 নামে একটি টিকার দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়াল ২০২৩ সালে বাংলাদেশে পরিচালনা করেছিল আইসিডিডিআর,বি ও ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তবে সেই গবেষণা এখনো বাণিজ্যিক পর্যায়ে যায়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ্যাকসিনের পাশাপাশি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মানুষের সচেতনতা। ঘরে বা আশপাশে পানি জমতে না দেওয়া, মশারি ব্যবহার, নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা—এসব প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাই ডেঙ্গু মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।