বালিয়াকান্দীতে চন্দনা নদীর কাঠ বাঁশের সেতু ভেঙে যাওয়ায় এলাকাবাসির চলাচলের ভোগান্তি - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, ফেব্রুয়ারিতে ভোট ঢাবির আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের তিন বছরের ডিনস অ্যাওয়ার্ড প্রদান ঢাবি নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের নবীন ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠান শেকৃবি কৃষিবিদদের ৩ দফা দাবি নিয়ে আগারগাঁও ব্লকেড মাথার পেছনে গুলির চিহ্ন, রক্তে ভেসে থাকা বুক: ট্রাইব্যুনালে বাবার সাক্ষ্য তিন দফা দাবিতে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে শাটডাউন, পরীক্ষা স্থগিত গ্রিনল্যান্ডকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র-ডেনমার্কে নতুন কূটনৈতিক উত্তেজনা স্পেনে বুনোলে ৮০তম টোমাটিনা উৎসব, ১২০ টন টমেটো ছোড়াছুড়িতে মেতে উঠলেন ২২ হাজার মানুষ শেরপুরে নারীর সামর্থ্য উন্নয়ন ও জলবায়ু অভিযোজন প্রযুক্তি নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত

বালিয়াকান্দীতে চন্দনা নদীর কাঠ বাঁশের সেতু ভেঙে যাওয়ায় এলাকাবাসির চলাচলের ভোগান্তি

মোঃ জাহিদুর রহিম মোল্লা, রাজবাড়ী প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫
  • ২৭ বার দেখা হয়েছে

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দী উপজেলার নবাবপুর ও ইসলামপুর ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষের জীবন আজ স্থবির হয়ে আছে একটি সেতুর অভাবে। বহরপুর–রামদিয়া সড়কের কোলঘেঁষা চন্দনা নদীর নারায়ণপুর-মাচাল ঘাট এলাকায় বহু বছর ধরে একটি স্থায়ী সেতুর দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী। আজও বাস্তবায়িত হয়নি তাদের কাঙ্ক্ষিত সেতু।

পারাপারের জন্য ২০০৬ সালে স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় এবং রমজান আলী মণ্ডলের নেতৃত্বে বাঁশের মাচাল দিয়ে তৈরি হয়েছিল অস্থায়ী সেতু। তখন থেকেই স্থানটির নাম হয় ‘মাচাল ঘাট’। পরে ২০২৩ সালে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে নতুন করে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু চলতি বছরের আগস্টে প্রবল স্রোত ও ভেসে আসা কচুরিপানার চাপে সেতুটি ভেঙে পড়ে। ফলে এলাকাবাসীর পারাপারের কোনো ব্যবস্থা আর নেই।

এই সেতুটি ছিল দুই ইউনিয়নের মানুষের একমাত্র ভরসা। বিশেষ করে নবাবপুরের শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী প্রতিদিন,দেশ সেরাস্কুল ” স্বাবলম্বী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ” এবং বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ৮ শতাধিক শিক্ষার্থী যাতায়াত করত এই সেতু পার হয়ে। এখন শিক্ষার্থীদের দুই-তিন কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে, যা সময়, অর্থ এবং শারীরিক কষ্টের কারণ।

গাংচর পদমদীর কৃষক জালাল শেখ বলেন,“ফসল বাজারে নিতে গেলে অনেক দূর ঘুরতে হয়। সময়মতো বাজারে পৌঁছানো যায় না, দামও পাওয়া যায় না। এপারের কৃষক আঃ করিম বলেন উপারে আমার জমি রয়েছে সবজি চাষ করি। এখানে দাঁড়িয়ে ক্ষেত দেখা গেলেও ক্ষেতে ধরতে হলে আমাকে তিন কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে।তাই এখানে একটা ব্রিজ আমাদের চাষাবাদকে বাঁচাতে পারে।”

৭৫ বছর বয়সী রমজান মণ্ডল বলেন, “প্রথমে ছিল বাঁশের সাকো। স্কুলের বাচ্চারা বই-খাতা নিয়ে পড়ে যেত। তাই আমি ২০০৬ সালে এলাকা বাসীর সহায়তায় বাঁশের মাচাল বানাই। প্রতিবছর মেরামত করতে হতো। এবার পুরোপুরি ভেঙে গেছে। আমার বয়স হয়ে গেছে। স্বপ্ন ছিল সরকার একটি পাকাসেতু নির্মাণ করবে। হয়তো মরার আগে তা দেখে যেতে পারব না।”

স্থানীয় শিক্ষার্থী সাথী আক্তার বলেন, “আগে সহজে স্কুলে যেতাম। এখন দুই কিলোমিটার বেশি হাঁটতে হয়। বই-খাতা নিয়ে খুব কষ্ট হয়।” গৃহবধূ আনিকা খাতুনের আক্ষেপ, “অসুস্থ হলে বিপদে পড়তে হয়। ওপারে হাসপাতালে যেতে নদীর ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।”

প্রতিটি নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

নবাবপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাদশাহ আলমগীর বলেন, “মাচাল ঘাটে একটি সেতু হলে দুই ইউনিয়নের মানুষ কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় উপকৃত হবে। পাশাপাশি জেলা সদর ও মীর মশাররফ হোসেন কমপ্লেক্সের সাথেও সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে।”

বালিয়াকান্দী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “চন্দনা নদীর মাচাল ঘাটে সেতু নির্মাণের বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। একটি বেইলি ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা প্রস্তুত করে দ্রুত সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে। জনস্বার্থে আমরা চাই সমাধান দ্রুত হোক।”

এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে এখানে একটি বেইলি ব্রিজ অথবা স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হোক, যাতে শিক্ষা, অর্থনীতি এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন হয়। তারা আশা করছে, এবার আর প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তব পদক্ষেপ নেবে প্রশাসন।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT