ঢাকাই চলচ্চিত্রের সুপরিচিত অভিনেতা অনন্ত জলিল সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তার দুই ছেলে ইসলামিক শিক্ষায় গভীরভাবে নিয়োজিত এবং এজন্য তিনি চলচ্চিত্রে দীর্ঘমেয়াদি অংশগ্রহণ কমিয়ে দিতে চাইছেন। অনন্ত জলিল বলেন, “আমার হাতে যে কয়েকটি সিনেমা কাজ আছে, সেগুলো শেষ করে হয়তো চলচ্চিত্র ছেড়ে দেব। কারণ বাচ্চারা বড় হয়ে যাচ্ছে, আর আমি চাইছি, তারা ইসলামিক লেখাপড়া করবে আর আমি সিনেমা করি—এটা ভালো দেখায় না।”
তিনি আরও বলেন, তার দুই ছেলে আরিজ ও আবরার। বড় ছেলে ১০ বছর বয়সী এবং ছোট ছেলে ৭ বছর বয়সী—ইসলামী শিক্ষায় অগ্রগতি করছে। বড় ছেলে ৮ পারা কোরআনে হাফেজ হয়েছেন, এবং ছোট ছেলেও কোরআন রিডিং শেষ করেছে ও দ্বিতীয়বার শুরু করেছে। অনন্ত জলিল জানান, “যখন বর্ষা প্রথম প্রেগন্যান্ট ছিলেন, তখনই আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম আমাদের ছেলে হাফেজ ও মুফতি হবেন। পরবর্তীতে মদিনায় ইসলামিক পড়াশোনা করানো হবে।”
ছেলেদের ইসলামিক শিক্ষার জন্য অনন্ত জলিল ও তার স্ত্রী বর্ষা তাদের সন্তানদের মানারাতে স্কুলে ভর্তি করেছেন। সেখানে ইংলিশ মিডিয়ামের সঙ্গে ধর্মীয় পড়াশোনা হয়। অনন্ত জলিল বলেন, “ওরা জোহরের নামাজের পর স্কুলে আসে, বাসায় ফেরার পর ওদের শিক্ষকরা ঘরে আসেন, তারপর তারা মাদ্রাসায় চলে যায়। ওরা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি ব্যস্ত। তাই বাচ্চাদের ওপর চাপ পড়া উচিত নয়, বরং তাদের ধর্মীয় শিক্ষা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।”
ছেলে-মেয়েদের ধর্মীয় চেতনায় প্রভাব রাখার পাশাপাশি অনন্ত জলিল পরিবারে নামাজ, কোরআন শিক্ষা ও ইসলামী মূল্যবোধকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা বাসায় নামাজের জন্য ইমাম নির্বাচন করি লটারি পদ্ধতিতে। সন্তানদের চরিত্র গঠনে ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব সবসময় রেখেছি। যদি তারা হাফেজ হয়ে যায়, আমরা আনন্দের সঙ্গে চলচ্চিত্রে বিদায় নেব।”
বর্তমানে অনন্ত জলিলের হাতে থাকা চলচ্চিত্রের কাজও শেষ পর্যায়ে। তিনি জানান, “‘নেত্রী দ্য লিডার’ সিনেমার কাজ প্রায় ৭০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে এবং শিগগিরই মুক্তির জন্য প্রস্তুত হবে। এরপরই আমি ভাবছি যে, চলচ্চিত্র থেকে বিশ্রাম নেওয়া এবং পুরো মনোযোগ ছেলেদের ইসলামিক শিক্ষা নিশ্চিত করার দিকে নিবেদন করব।”
এভাবে অনন্ত জলিলের সিদ্ধান্ত তার পরিবারের ইসলামিক মূল্যবোধ, ছেলেদের ধর্মীয় শিক্ষা ও চরিত্র গঠনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধার প্রতিফলন হিসেবে দেখা যাচ্ছে। অভিনেতা নিজেও স্বীকার করেছেন, চলচ্চিত্রের আলোচনায় থাকলেও তার জীবনের মূল ফোকাস এখন ইসলামী শিক্ষার দিকে।